যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে আফ্রিকান অভিবাসীদের জীবনবাজি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ২২:০২

গত এক দশক ধরে গৃহযুদ্ধের কবলে বিপর্যস্ত ইয়েমেন- আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য একটি বিপজ্জনক ও অবহেলার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর হাজার হাজার ইথিওপিয়া, সোমালিয়া ও সুদানের নাগরিক ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরব ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে কাজের সন্ধানে পাড়ি জমান। তবে এই পথটি শুধু শারীরিক নয়, মানবিক দিক থেকেও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
২০২৫ সালের ২৮ এপ্রিল ইয়েমেনের সাদা শহরে একটি হুথি পরিচালিত কারাগারে মার্কিন বিমান হামলায় কমপক্ষে ৬৮ জন আফ্রিকান অভিবাসী নিহত ও ৪৭ জন আহত হন। এই হামলাটি "অপারেশন রাফ রাইডার" নামে পরিচিত মার্কিন সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়, যা হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে। তবে এই হামলার কারণে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির ঘটনা আন্তর্জাতিক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
ইয়েমেনে আফ্রিকান অভিবাসীরা বিভিন্ন ধরনের শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। তারা পাচারকারীদের দ্বারা শোষিত হন, যেখানে তাদের কাজের জন্য বাধ্য করা হয়; কখনো কখনো যৌন নিপীড়নের শিকারও হতে হয়। হুথি বিদ্রোহী, ইয়েমেন সরকার এবং সৌদি সীমান্ত রক্ষীরা তাদের আটক করে, নির্যাতন করে এবং কখনো কখনো গুম করে। এই অভিবাসীরা খাবার, পানি, চিকিৎসা ও মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত এবং অনেকেই মরুভূমিতে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা ইয়েমেনের অভ্যন্তরে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আফ্রিকান অভিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সহায়তা ও মনিটরিংয়ের অভাব এই সংকটকে আরো জটিল করে তুলছে।
ইয়েমেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতি আফ্রিকান অভিবাসীদের জন্য একটি মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই অবহেলিত অভিবাসীদের সুরক্ষা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তাদের জীবন ও মর্যাদা রক্ষায় মানবিক সহায়তা, সুরক্ষা ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক মনিটরিং অত্যন্ত জরুরি।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স