প্রবাসে থেকেও পেনশন সুবিধা: বাংলাদেশ সরকারের ‘প্রবাস স্কিম’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৯

বাংলাদেশ সরকার ২০২৩ সালে চালু করেছে সর্বজনীন পেনশন স্কিম, যার আওতায় বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরাও এখন পেনশন সুবিধা নিতে পারেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীরা শুধু দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন না, বরং নিজের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারছেন।
কীভাবে কাজ করে ‘প্রবাস স্কিম’?
‘প্রবাস স্কিম’ হলো সর্বজনীন পেনশন স্কিমের একটি বিশেষ প্যাকেজ, যা বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য তৈরি। এই স্কিমে অংশ নিতে একজন প্রবাসীকে নির্ধারিত মাসিক চাঁদা বিদেশি মুদ্রায় দিতে হয়। চাঁদার পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছে চারটি স্তরে— ২ হাজার, ৫ হাজার, ৭ হাজার ৫০০ ও ১০ হাজার টাকা সমমূল্য।
চাঁদা প্রদানের মেয়াদ অনুযায়ী, একজন প্রবাসী ৬০ বছর বয়স থেকে আজীবন মাসিক পেনশন পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ ১৮ বছর বয়সে শুরু করে ১০ হাজার টাকা সমমূল্যের চাঁদা ৪২ বছর ধরে দেন, তাহলে তিনি প্রতি মাসে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা পেনশন পাবেন।
নিবন্ধন ও চাঁদা প্রদানের পদ্ধতি
প্রবাসীরা www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন নিবন্ধন করতে পারেন। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নেই, তারা পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশি মুদ্রায় চাঁদা দিতে পারবেন ব্যাংকিং চ্যানেল, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) বা এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে।
নিবন্ধনের পর একজন প্রবাসী একটি ইউনিক পেনশন আইডি ও পাসওয়ার্ড পাবেন, যার মাধ্যমে তিনি নিজের পেনশন জমা, মুনাফা ও অবস্থা অনলাইনে দেখতে পারবেন।
অতিরিক্ত সুবিধা
- ৫০% পর্যন্ত জমা অর্থ ঋণ হিসেবে তোলা যাবে
- মাসিক পেনশন আয়করমুক্ত
- মৃত্যুর পর ৭৫ বছর পর্যন্ত মনোনীত ব্যক্তি পেনশন পাবেন
- ১০ বছরের কম চাঁদা দিলে মৃত্যুর পর জমা ও মুনাফা ফেরত দেওয়া হবে
- পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ
প্রবাসীরা চাইলে দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের (পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী) জন্যও ‘সুরক্ষা স্কিম’–এ অংশ নিতে পারেন এবং তাদের পক্ষ থেকে মাসিক চাঁদা দিতে পারেন। এই উদ্যোগ প্রবাসীদের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা ও ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা এনে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ