
নাইজেরিয়ার ডেপুটি স্পিকার বেঞ্জামিন কালু সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে আয়োজিত “EU-African Relations: An African Perspective” শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অভিবাসন রোধে একটি নতুন কৌশল তুলে ধরেছেন। তার মতে, “নিয়ার-শোরিং” বা “কাঁচামালের কাছাকাছি প্রযুক্তি ও শিল্পায়ন স্থাপন”ই হতে পারে আফ্রিকার জন্য টেকসই সমাধান।
আফ্রিকার রয়েছে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ, আর ইউরোপের রয়েছে প্রযুক্তি ও অর্থ। এই দুই মহাদেশের যৌথ অংশীদারিত্বে আফ্রিকায় শিল্পায়ন ঘটালে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, যা তরুণদের ইউরোপমুখী অভিবাসন প্রবণতা কমাতে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, “আফ্রিকার তরুণরা সুযোগ খুঁজছে। সেই সুযোগ যদি ইউরোপে থাকে, তাহলে তারা সেদিকেই যাবে। কিন্তু যদি সেই সুযোগ আফ্রিকাতেই তৈরি করা যায়, তাহলে অভিবাসনের প্রবণতা কমবে।”
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বের ৪২ শতাংশ তরুণ আফ্রিকায় বসবাস করবে। এই বিপুল জনশক্তিকে কাজে লাগাতে না পারলে তা হবে এক অপচয়।
অভিবাসন রোধে কীভাবে কাজ করবে এই কৌশল?
আফ্রিকায় কাঁচামাল যেমন কোকো, লিথিয়াম, কপার ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত করে স্থানীয়ভাবে ব্যাটারি, চকলেট, ইলেকট্রনিকস তৈরি করা গেলে তা শুধু রপ্তানি আয়ই বাড়াবে না, বরং তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ইউরোপের প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ যদি আফ্রিকায় স্থানান্তরিত হয়, তাহলে তা হবে উভয় মহাদেশের জন্য লাভজনক। একদিকে ইউরোপ পাবে কাঁচামালের কাছাকাছি উৎপাদন সুবিধা, অন্যদিকে আফ্রিকা পাবে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।
ডেপুটি স্পিকার কালুর প্রস্তাবিত “নিয়ার-শোরিং” কৌশলটি শুধু অভিবাসন রোধ নয়, বরং আফ্রিকার স্বনির্ভরতা ও অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের একটি রূপরেখা। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন ইউরোপ-আফ্রিকা যৌথ উদ্যোগ, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ।
তথ্যসূত্র: দ্য নেশন অনলাইন