
স্পেনের বুনিওল শহর যেন একদিনের জন্য হয়ে উঠেছিল টমেটোর রাজ্য! ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘লা টমাটিনা’ উৎসবে এবার অংশ নিয়েছেন প্রায় ২২ হাজার মানুষ, যেখানে অস্ত্র ছিল না, ছিল শুধু ১২০ টন পাকা টমেটো!
এই উৎসবের শুরুটা ১৯৪৫ সালে, যখন কিছু স্থানীয় তরুণ মজা করে একে অপরকে টমেটো ছুড়ে মারতে শুরু করেন। সেই খেলার ছলেই জন্ম নেয় বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত খাবার-যুদ্ধ। এখন এটি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে এক রঙিন, রসালো এবং একেবারে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা।
এবারের উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা চোখে গগলস, গায়ে পুরনো জামা পরে নেমে পড়েন রাস্তায়। এক ঘণ্টার এই ‘যুদ্ধ’ চলাকালে শহরের রাস্তা যেন হয়ে ওঠে টমেটোর রসে গড়া নদী। কেউ হাসছেন, কেউ চিৎকার করছেন, কেউ আবার সেলফি তুলছেন; সব মিলিয়ে যেন এক বিশাল লাল রঙের উন্মাদনা।
আয়ারল্যান্ডের অ্যাড্রিয়ান কলম্ব, যিনি ১৯৯৯ সালে প্রথমবার অংশ নিয়েছিলেন। বলেন, “যখন শুরু হয়, তখন সবকিছুই টমেটোর ঝাপটায় ঝাপসা হয়ে যায়। কিন্তু এটা ছিল দারুণ মজা!”
এই উৎসবে অংশ নিতে এখন ১৫ ইউরোতে টিকিট কাটতে হয়। আর আশপাশের শহর থেকে বাসে করে মানুষজন আসেন। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ি ঢেকে ফেলেন প্লাস্টিকের শিট দিয়ে, যেন টমেটোর রস ঢুকে না পড়ে। আর উৎসব শেষে শহর পরিষ্কারের জন্য থাকে বিশেষ টিম, যারা দ্রুত রাস্তাগুলোকে আবার আগের মতো করে তোলে।
‘লা টমাটিনা’ শুধু একটি উৎসব নয়, এটি স্পেনের সংস্কৃতির এক অনন্য প্রতীক। যেখানে মানুষ যুদ্ধ করে, কিন্তু ভালোবাসা আর হাসির মাধ্যমে। রক্ত নয়, টমেটোর রসেই ভিজে যায় শহর, আর স্মৃতিতে থেকে যায় এক রঙিন দিন।
তথ্যসূত্র: গালফ নিউজ