লুক্সেমবার্গের আঙ্গুরক্ষেতে প্রবাসী শ্রমিকরাই ভরসা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২১

লুক্সেমবার্গের ঐতিহ্যবাহী আঙ্গুর সংগ্রহ মৌসুমে স্থানীয় শ্রমিক সংকটের কারণে প্রতি বছরই বিদেশি মৌসুমি শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করতে হয়। ফ্রান্স, পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এই শরৎকালীন শ্রমিকরাই মূলত আঙ্গুর সংগ্রহের প্রাণ।
গত সপ্তাহে মসেল উপত্যকা যখন কুয়াশায় ঢাকা, তখন রেমিশ ও বেখ-ক্লেইনমাখার অঞ্চলে শতাধিক শ্রমিক ব্যস্ত ছিলেন আঙ্গুর বাছাইয়ে। তাদের মধ্যে ছিলেন ফ্রান্স সীমান্তবর্তী এলাকার তিনজন শ্রমিক, যারা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ওয়াইন প্রস্তুতকারক জোসি গ্লোডেনের সঙ্গে কাজ করছেন।
ভিন্সমোসেল কো-অপারেটিভের সভাপতি গ্লোডেন জানান, তিনি বছরের পর বছর ফ্রান্স থেকে শ্রমিক আনছেন। কারণ তারা অভিজ্ঞ এবং তাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা সহজ। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের সম্মান দিতে হবে, তাদের যেন গাড়ি বা ক্যারাভানে ঘুমাতে না হয়, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।”
৭৩ বছর বয়সী ক্লেমেন্ট একজন অবসরপ্রাপ্ত ওয়েল্ডার, গত ১৩ বছর ধরে এই কাজে যুক্ত। তিনি বলেন, “শুধু এক বছরের জন্য এসেছিলাম, কিন্তু পরিবেশ এত ভালো যে থেকে গেছি।” ৬৫ বছর বয়সী ফিলিপ ১৯৯৮ সালে গ্লোডেনের বাবার সঙ্গে কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, “নতুন মানুষদের সঙ্গে দেখা হয়, আত্মীয়দেরও এনেছি, যদিও সবাই টিকে থাকতে পারে না।”
নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি ২৯ বছর বয়সী আনিয়া পোল্যান্ড থেকে এসেছেন। নরওয়ে ও ইংল্যান্ডে কাজ করার পর লুক্সেমবার্গে আসেন চাচার মাধ্যমে। প্রথমে ওয়েলেনস্টাইনের সেলারে ফর্কলিফট চালিয়ে কাজ শুরু করেন। এখন ছয় বছর ধরে কাজ করছেন এবং ওয়াইন উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকতে পেরে আনন্দিত।
তবে শ্রমিক সংকট এখনো প্রকট। অনেক ওয়াইন প্রস্তুতকারক এখন রোমানিয়ার মতো নিম্ন মজুরির দেশ থেকে শ্রমিক আনছেন। এই সংকট মোকাবিলায় কৃষিমন্ত্রী মার্টিন হ্যানসেন ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছর থেকে মৌসুমি শ্রমিকদের জন্য পুরো মাসে মাত্র ৩ শতাংশ কর হার প্রযোজ্য হবে, যা আগে ছিল ১৮ দিনের জন্য।
এই উদ্যোগ শ্রমিকদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: আরটিএল টুডে