Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

সৌদি আরবে গৃহকর্মী কারা, কী তাদের অধিকার?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৮

সৌদি আরবে গৃহকর্মী কারা, কী তাদের অধিকার?

সৌদি আরব সরকার গৃহকর্মী খাতে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি বা চার্জ আদায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নিয়োগ, পেশা পরিবর্তন, সেবা স্থানান্তর, বসবাসের অনুমতিপত্র (ইকামা) বা ওয়ার্ক পারমিটের জন্য গৃহকর্মীদের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেওয়া যাবে না। এ সংবাদ প্রকাশ করেছে সৌদি গেজেট।

মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের (MHRSD) নির্দেশনা অনুযায়ী, এই নিয়ম ভঙ্গ করলে নিয়োগদাতাকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা এবং তিন বছরের জন্য নতুন গৃহকর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। পুনরায় একই অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুণ হতে পারে, এমনকি স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও জারি হতে পারে।

নতুন নির্দেশনায় যেসব পেশাকে গৃহকর্মী খাতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলো হলো- গৃহকর্মী, ব্যক্তিগত ড্রাইভার, গৃহশিক্ষক, হোম নার্স, রাঁধুনি, গৃহপরিকল্পক, গৃহপরিচালক, নিরাপত্তাকর্মী, মালী, কফি প্রস্তুতকারী, ব্যক্তিগত সহকারী এবং ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ। ভবিষ্যতে আরো পেশা এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে।

গৃহকর্মীদের জন্য কিছু দায়িত্বও নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন- নিয়োগকর্তার সম্পদের যত্ন নেওয়া, পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং ইসলামী মূল্যবোধ ও সামাজিক নীতি-নৈতিকতা বজায় রাখা। এসব নিয়ম ভঙ্গ করলে কর্মীকে সর্বোচ্চ ২ হাজার রিয়াল জরিমানা, স্থায়ীভাবে সৌদিতে কাজের নিষেধাজ্ঞা অথবা উভয় শাস্তি দেওয়া হতে পারে। সেই সঙ্গে নিজ খরচে নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।

গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে:

- চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত বেতন দিতে হবে  

- সপ্তাহে একদিন ছুটি দিতে হবে  

- প্রতিদিন টানা আট ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ থাকতে হবে  

- দুই বছর কাজের পর এক মাসের পূর্ণ ছুটি  

- প্রতি দুই বছর পর নিয়োগকর্তার খরচে নিজ দেশে যাতায়াতের টিকিট  

- চার বছর কাজ শেষে এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ গ্র্যাচুইটি  

- বছরে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের বেতনসহ অসুস্থতাজনিত ছুটি (মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী)

এছাড়া, নিয়োগকর্তা কর্মীর পাসপোর্ট বা ইকামা জব্দ করতে পারবেন না এবং কর্মীকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দিতে হবে। ইকামা নবায়নসহ আইনি প্রক্রিয়ার যাবতীয় ব্যয় নিয়োগকর্তাকেই বহন করতে হবে।

২০০৮ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সৌদি আরবকে ‘কাফালা’ ব্যবস্থা বাতিলের আহ্বান জানায়। এই ব্যবস্থায় বিদেশি কর্মীরা নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া চাকরি পরিবর্তন বা দেশত্যাগ করতে পারতেন না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি সরকার এ ব্যবস্থায় আংশিক সংস্কার এনেছে, যা বিদেশি কর্মীদের স্বাধীনতা কিছুটা বাড়িয়েছে।

Logo