
স্কটল্যান্ডের কৃষি খাতে শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় এখন ভরসা বিদেশি দক্ষ কর্মীরা। দেশটির কৃষকরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত শ্রমিক না পাওয়ায় তারা বিদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি আনতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে দুধ উৎপাদন, পশুপালন ও মৌসুমি ফল সংগ্রহের মতো কাজে ফিলিপাইনের শ্রমিকরা নির্ভরযোগ্য ও অভিজ্ঞ।
স্কটিশ কৃষকদের মতে, ফিলিপাইনের কর্মীরা পরিশ্রমী, দায়িত্বশীল এবং দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে আগ্রহী। তারা শুধু মৌসুমি নয়, বরং স্থায়ীভাবে কাজ করতে চান। অনেকেই ইংরেজি ভাষায় দক্ষ, ফলে যোগাযোগেও সুবিধা হয়। কৃষকরা বলছেন, “তারা শুধু কাজ করেন না, বরং আমাদের খামারকে পরিবার মনে করেন”।
তবে এই শ্রমিকদের নিয়োগে রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাজ্যের বর্তমান অভিবাসন নীতিতে কৃষি খাতে স্থায়ী ভিসা পাওয়া কঠিন। অধিকাংশ ভিসা মৌসুমি, ফলে দক্ষ শ্রমিকরা দীর্ঘমেয়াদি কাজের সুযোগ পান না। স্কটিশ কৃষকরা চাইছেন, সরকার যেন কৃষি খাতে দক্ষ বিদেশি শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী ভিসা সহজ করে।
সংকট স্থানীয় তরুণরা কৃষিকাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন। কঠোর পরিশ্রম, গ্রামীণ পরিবেশ এবং কম মজুরির কারণে অনেকেই এই খাতে কাজ করতে চান না। ফলে খামার মালিকরা বাধ্য হচ্ছেন বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে। বিশেষ করে দুধ উৎপাদন ও পশুপালনে ২৪ ঘণ্টার দায়িত্ব পালনের জন্য অভিজ্ঞ ও নিবেদিত কর্মী প্রয়োজন।
স্কটল্যান্ডের কৃষি খাত টিকিয়ে রাখতে হলে দক্ষ শ্রমিকের অভাব পূরণ জরুরি। কৃষকরা বলছেন, “আমরা শুধু শ্রমিক চাই না, আমরা এমন মানুষ চাই, যারা আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করবে”। তারা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন এনে কৃষি খাতে দক্ষ বিদেশি শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী সুযোগ তৈরি করা হয়।
এই পরিস্থিতি শুধু স্কটল্যান্ড নয়, গোটা যুক্তরাজ্যের কৃষি খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। দক্ষ শ্রমিক ছাড়া কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই সময় এসেছে, অভিবাসন নীতিকে বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান