Logo
×

Follow Us

অন্যান্য

DAAD Scholarship: প্রথম পর্ব

কৃষি গবেষণাসহ নানা ফিল্ডে স্কলারশিপের সুযোগ আছে জার্মানিতে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৫২

কৃষি গবেষণাসহ নানা ফিল্ডে স্কলারশিপের সুযোগ আছে জার্মানিতে
DAAD (German Academic Exchange Service) মূলত জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ প্রসারে কাজ করে। এটির বাংলাদেশ কার্যালয়টি ঢাকাস্থ জার্মান কালচারাল সেন্টারে অবস্থিত এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ, বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন, আবেদন প্রক্রিয়া ও ভাষা প্রস্তুতি বিষয়ে তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করে। জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাডেমিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং গবেষণা বিনিময়েও ভূমিকা রাখে এই কার্যালয়। সম্প্রতি মাহবুব স্মারক কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান সুমন এর সাথে। আজ থাকছে প্রথম পর্ব)


মাইগ্রেশন কনসার্ন: স্বাগত আপনাকে মাইগ্রেশন কনসার্নের এই আয়োজনে। প্রথমেই জানতে চাইব, DAAD-এর বাংলাদেশে কার্যক্রম কবে থেকে শুরু?

মাহমুদুল হাসান: ধন্যবাদ আপনাকে। আমাদের বাংলাদেশের এই অফিসটি একেবারে শুরু থেকেই জার্মান কালচারাল সেন্টারের সঙ্গেই আছে। ২০০৬ সাল থেকেই আমরা জার্মান কালচারাল সেন্টারের এই অফিসে আছি। মানে প্রায় ১৯ বছর হলো আমরা এখানে কাজ করছি। এটি একটি রিজিওনাল অফিস বা আঞ্চলিক কার্যালয়। এ অঞ্চলে ছয়টি কার্যালয় আছে আমাদের প্রতিষ্ঠানের। একটি বাংলাদেশে, একটি শ্রীলঙ্কায় ও বাকি চারটি ভারতে। এই ছয়টা অফিস পরিচালিত হয় ভারতের যে রিজিওনাল কার্যালয় আছে, তার অধীনে।

মাইগ্রেশন কনসার্ন: আপনার প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য কী?

মাহমুদুল হাসান: আমরা মূলত শিক্ষা বিস্তার নিয়ে কাজ করছি। এই যেমন জার্মান কালচারাল সেন্টার যেটা করছে, জার্মান ভাষা ও সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যারা শুধু এডুকেশন নিয়ে জার্মানি যেতে চাইছে, সেটা ব্যাচেলর হতে পারে, মাস্টার্স হতে পারে, পিএইচডি হতে পারে; ইভেন পোস্টডকও হতে পারে। আমরা এই শিক্ষার্থীদের একধরনের গাইডলাইন দিই। আমরা পরামর্শ দিই, শিক্ষার্থীরা কীভাবে জার্মানি গিয়ে তার নতুন জীবন শুরু করবে, সেটার পরিপূর্ণভাবে একটা গাইডলাইন প্রদান করি। এটা হচ্ছে আমাদের মূল কাজ। এর বাইরে আমাদের আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে রিসার্চ ফেসিলিটিট করা। বাংলাদেশ থেকে অনেক রিসার্চ প্রজেক্ট আছে, যেগুলোতে জার্মানি অনুদান দিয়ে থাকে। অনেক বড় বড় প্রজেক্টের কাজ এখানে হয়। বছর দুয়েক আগে গার্মেন্টস সেক্টরে আমরা বিশাল একটা কাজ করেছিলাম। গার্মেন্টস সেক্টরে বলতে টেক্সটাইল এডুকেশনের কারিকুলাম ডিজাইন নিয়ে একটা কাজ হয়েছিল। প্রায় ৩-৪ বছর মেয়াদি। জিআইজেডের সহায়তায়। এভাবে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশে কৃষি সেক্টরে অনেক গবেষণা আছে, যেগুলোতে আমাদের ফান্ডিং আছে। আমরা মূলত এ ধরনের প্রজেক্ট খুঁজে বের করি এবং সেখানে ফান্ডিং করি। বাংলাদেশের অনেক ইয়ং ট্যালেন্টেড রিসার্চাররা ওই ফিল্ডগুলোতে কাজ করে। তারা বাংলাদেশে গবেষণা করে এবং সেটার রেজাল্টটা জার্মানিতে পাঠায়। আপনি জানেন যে, জার্মানি হলো এ ল্যান্ড অব রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন। তাই, এই গবেষণার জায়গাটায় আমরা অনেক কাজ করি। 

এছাড়া আমরা স্কলারশিপকে প্রমোট করি। ডিএএডির যে স্কলারশিপগুলো আছে, সেগুলোকে আমরা প্রমোটে করি এবং আপনি যে সময় এসেছেন এটাই আসলে স্কলারশিপের সিজন শুরু হচ্ছে। আমাদের জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর; এই চার মাসব্যাপী আমরা এই স্কলারশিপগুলোকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আমরা প্রমোট করি।

মাইগ্রেশন কনসার্ন: জার্মানিতে আমরা জানি, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো টিউশন ফি নেই। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ ছেলেমেয়ে আসলে এই স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানি যেতে পারছে এবং যেতে না পারলে কেন যেতে পারছে না- এটা কি একটু জানাবেন?

মাহমুদুল হাসান: প্রথমত স্কলারশিপ যারা পায়, তাদের সব থেকে বড় যে সুবিধা সেটা হচ্ছে, খুবই দ্রুত তারা ভিসা পেয়ে যায়। কারণ তাদের ভিসাটা আলাদা ক্যাটাগরিতে দেখা হয়। সো এই যে একটা ওয়েটিং টাইমের কথা আমরা শুনি জার্মান অ্যাম্বাসিতে আছে, সেটা আর তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। এটা হচ্ছে অ্যাডভান্টেজ। 

মাইগ্রেশন কনসার্ন: এই স্কলারশিপগুলো নিয়ে কী পরিমাণ শিক্ষার্থী যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে?

মাহমুদুল হাসান: এক্সাক্টলি নাম্বারটা হয়তো এই মুহূর্তে বলতে পারি না। আমাদের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে বিভিন্ন রকম স্কলারশিপ আছে। যেমন আর্কিটেচারের উপর একটা স্কলারশিপ আছে। সেখানে মনে করেন, ১০ জন অ্যাপ্লাই করেছে যদি ১০ জনের মধ্যে এমন হয় যে আটজনই খুবই আউটস্ট্যান্ডিং পার্টিসিপেন্ট, তাহলে কিন্তু ডিএএডি আটজনকেই স্কলারশিপ দেবে। আবার যদি দেখা যায়, ১০ জনের মধ্যে একজন মাত্র ভালো, মানে যাকে তারা যোগ্য মনে করছে, তাহলে একজনকেই দেবে। এ জন্য ডিএএডি স্কলারশিপে ওইভাবে কোনো পার্টিকুলার কোটা সিস্টেম নেই। এ জন্য আমরা চাই বেশি বেশি অ্যাপ্লিকেশন জমা পড়ুক, যাতে বাংলাদেশ থেকে বেশি বেশি স্কলারশিপ পায়। এটাই হচ্ছে আমাদের একটা উদ্দেশ্য।

মাইগ্রেশন কনসার্ন: কোন কোন ফিল্ডে আপনারা স্কলারশিপ দিচ্ছেন?

মাহমুদুল হাসান: মাস্টার্স লেভেল থেকে আমাদের স্কলারশিপগুলো শুরু। মাস্টার্সের যে সাবজেক্টগুলো আছে, যেমন আর্কিটেকচার, ফাইন আর্টস, ডিজাইন, ভিজুয়াল কমিউনিকেশন অ্যান্ড ফিল্ম, মিউজিক, পারফর্মিং আর্টস- এগুলো আছে। তারপরে আমাদের আরেকটা প্রোগ্রাম আছে পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গুড গভর্ন্যান্স। এটাতে একটা স্কলারশিপ আছে। আর আমাদের বাংলাদেশে মোটামুটি পপুলার যে স্কলারশিপ, সেটা হলো ডেভেলপমেন্ট রিলেটেড পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স। যেটাকে আমরা বলি ইপিওএস। এটাতে আবার একটা যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে মনে করেন কেউ একজন মিডিয়া স্টাডিজেই একটা স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছেন। তাহলে কিন্তু তাকে মিডিয়া স্টাডিজের উপরে বাংলাদেশের দুই বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ক্যাটাগরিতে প্রায় ৪৫-৪৭টা সাবজেক্ট আছে। প্রত্যেকটা সাবজেক্টেই একজন আবেদন করতে পারবে। তার যোগ্যতা অনুযায়ী সে স্কলারশিপ পাবে। ডিএএডি সেটা নিশ্চিত করবে। যারা আমাদের কার্যালয়ে আসে, আমরা ম্যাক্সিমাম কেসেই দেখি যে, তারা সবাই বলে যে স্কলারশিপ পেতে গেলে এক্সপেরিয়েন্স লাগবে। কিন্তু এই ধারণাটা ভুল। এই ধারণাটা ভুল এ জন্যই যে, এক্সপেরিয়েন্স লাগবে শুধু বিশেষ ধরনের স্কলারশিপ পেতে। এটা হলো ডেভেলপমেন্ট রিলেটেড পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স।অথচ আর্কিটেকচার, ফাইন আর্টসের মতো বিষয়গুলোতে কিন্তু এক্সপেরিয়েন্স লাগবে না। এ জন্য আমরা বলব, স্কলারশিপে কি কি আছে টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনগুলো ভালো করে দেখে নিতে। আমাদের যে ওয়েবসাইট আছে, সেটাতে যদি সবাই একটু দেখে যে বাংলাদেশিদের জন্য কোন কোন স্কলারশিপগুলো আছে। মাস্টার্স আর পিএইচডির ক্ষেত্রে সাবজেক্ট যাই হোক না কেন, সে কিন্তু উইথ আউট অ্যানি এক্সপেরিয়েন্স স্কলারশিপ পাবে। বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট থাকলে সে পিএইচডির জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারবে। অক্টোবরের ফার্স্ট উইক বা সেকেন্ড উইক সাধারণত ডেডলাইন থাকে।

মাইগ্রেশন কনসার্ন: আপনার কী ধারণা, কোন সাবজেক্টে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা স্কলারশিপের জন্য বেশি অ্যাপ্লাই করছে?

মাহমুদুল হাসান: জার্মানি যেহেতু ল্যান্ড অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, দেখা যায় যে সায়েন্সের ছেলেমেয়েরাই বেশি যেতে আগ্রহী হয়। কিন্তু আমি যদি লাস্ট কাপল অব ইয়ার্স এই ট্রেন্ডটা দেখি, তাহলে কিন্তু বিভিন্ন সাবজেক্টের ছেলেমেয়েদের আমরা জার্মানিতে পড়তে যেতে দেখছি। এটা যে শুধু সায়েন্স তা না, এটা আর্টসের সাবজেক্ট হতে পারে, এটা ফাইন আর্টসের সাবজেক্ট হতে পারে। সব সাবজেক্টেই মোটামুটি যাওয়ার আগ্রহ আছে এখন। ইভেন লাইক সব থেকে বেশি যদি আমি বলি, সেটা হচ্ছে কম্পিউটার সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এআই রিলেটেড যে সাবজেক্টগুলো বা বিজনেস অ্যানালাইটিক্সের মতো বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের বেশি আগ্রহ। এই ধরনের সাবজেক্টগুলোতে খুব বেশি চাহিদা আজকাল দেখা যাচ্ছে।

চলবে…

Logo