ডায়াবেটিক রোগী ও মোটা মানুষের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া কঠিন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৩
ডায়াবেটিসসহ নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তাদের কাছে নতুন নির্দেশনা পাঠিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে এ ধরনের আবেদনকারীরা বয়স বা স্বাস্থ্যগত কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত খরচের বোঝা তৈরি করতে পারেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পাঠানো নির্দেশনায় ভিসা কর্মকর্তাদের আরো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এখন তারা আবেদনকারীর স্বাস্থ্যগত অবস্থার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য ঘোষণা করতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে হৃদরোগ, শ্বাসনালির রোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, বিপাকজনিত সমস্যা, স্নায়ুবিষয়ক জটিলতা এবং মানসিক রোগ। এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যয় লাখ লাখ ডলার হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন নির্দেশনায় স্বাস্থ্যগত দিককে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আবেদনকারীর বয়স ও স্থূলতার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে। স্থূলতা থেকে হাঁপানি, উচ্চ রক্তচাপ ও নিদ্রাহীনতার মতো সমস্যা তৈরি হয়, যা সরকারের জন্য বাড়তি খরচের কারণ হতে পারে। ফলে এসব সমস্যায় আক্রান্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আবেদন বাতিল করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্যগত তথ্য যাচাই করে আসছে। সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কিনা, টিকার ইতিহাস আছে কিনা- এসব পরীক্ষা করা হয়। তবে এবার তালিকাটি আরো বিস্তৃত হয়েছে।
আইনি সহায়তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চার্লস হুইলার বলেন, নতুন নির্দেশনা প্রায় সব ভিসা আবেদনকারীর জন্য প্রযোজ্য হলেও মূলত স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, নির্দেশনাটি পররাষ্ট্র দপ্তরের নিজস্ব হ্যান্ডবুকের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ সেখানে বলা হয়েছে, ‘এটা হতে পারে’ এমন অনুমানের ভিত্তিতে কোনো আবেদন বাতিল করা যাবে না।
বিশ্বে প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। হৃদরোগও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। এসব বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার অভিবাসন নীতিতে স্বাস্থ্যকে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে দেখছে। আবেদনকারীরা সরকারি সহায়তা ছাড়া নিজের চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারবেন কিনা, সেটিও ভিসা কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে।
এই নির্দেশনা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের অংশ, যার লক্ষ্য নতুন অভিবাসীদের প্রবেশ সীমিত করা এবং অননুমোদিত অভিবাসীদের বিতাড়িত করা। এরই অংশ হিসেবে নিয়মিত গণগ্রেপ্তার, শরণার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং অভিবাসন সীমিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
logo-1-1740906910.png)