নিউ ইয়র্কে প্রথম অভিবাসী মেয়র মামদানি, প্রবাসীদের উচ্ছ্বাস
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১২
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে অভিবাসী পটভূমির প্রার্থী জোহরান মামদানি বিজয়ী হয়েছেন। এই ঐতিহাসিক বিজয়ে নিউ ইয়র্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উচ্ছ্বাস।
৩৪ বছর বয়সী মামদানি একজন মুসলিম, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী রাজনীতিক। তিনি ডেমোক্রেটিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে নিউ ইয়র্কের মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে নিউ ইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম অভিবাসী ও মুসলিম মেয়র হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন।
নির্বাচনে মামদানি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করেন। তার নির্বাচনী প্রচারণায় ছিল ভাড়া বৃদ্ধি স্থগিত, বিনামূল্যে গণপরিবহন এবং সব শিশুর জন্য সেবা চালুর প্রতিশ্রুতি। এই কর্মসূচিগুলোর অর্থায়নের জন্য তিনি ধনীদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের প্রস্তাব দেন।
জোহরান মামদানির পিতা হলেন মাহমুদ মামদানি, একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ইতিহাসবিদ এবং অধ্যাপক। তিনি উগান্ডা ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং আফ্রিকান রাজনীতি, ঔপনিবেশিকতা ও মানবাধিকার বিষয়ে গবেষণার জন্য পরিচিত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং আফ্রিকান স্টাডিজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
জোহরানের মা হলেন মিরা নায়ার, একজন খ্যাতনামা ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি Salaam Bombay!, Monsoon Wedding, The Namesake- এর মতো আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। মিরা নায়ার তার কাজের মাধ্যমে ভারতীয় সংস্কৃতি ও অভিবাসী জীবনের জটিলতা তুলে ধরেছেন।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন এলাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা মিছিল, সমাবেশ ও সামাজিক মাধ্যমে অভিনন্দন বার্তা দিয়ে তাদের আনন্দ প্রকাশ করেন। অনেকে বলেছেন, মামদানির বিজয় অভিবাসীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মামদানির বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রগতিশীল ধারার উত্থান এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রতীক। এটি প্রমাণ করে, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো রাজনীতি এখনো ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে।
মামদানি নিজেও বিজয়ের পর এক ভাষণে বলেন, “এই শহর আমার মতো অভিবাসীদের জন্যও। আমরা শুধু এখানে কাজ করতে আসিনি, নেতৃত্ব দিতেও এসেছি।"
এই বিজয় শুধু নিউ ইয়র্ক নয়, বরং বিশ্বজুড়ে অভিবাসীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে আরো অভিবাসী নেতারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অংশ নিয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবেন।
logo-1-1740906910.png)