কানাডা সরকার সম্প্রতি ভারতীয় শিক্ষার্থীদের স্টাডি পারমিট আবেদন নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, যার ফলে অধিকাংশ আবেদন বাতিল করা হচ্ছে। জালিয়াতির আশঙ্কা এবং নথিপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কানাডার অভিবাসন বিভাগ।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে ভারত থেকে পাঠানো স্টাডি পারমিট আবেদনের প্রায় ৬০ শতাংশই বাতিল করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব বিভাগ (IRCC) জানিয়েছে, ভুয়া কলেজে ভর্তি, জাল অ্যাডমিশন লেটার এবং ভিসা এজেন্টদের প্রতারণা এই বাতিলের মূল কারণ।

এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ২০২৩ সালে ভারতীয় শিক্ষার্থী জগরিত গ্রেওয়ালের কানাডা থেকে বহিষ্কারের ঘটনার পর, যিনি একটি ভুয়া কলেজে ভর্তি ছিলেন বলে জানা যায়। এরপর থেকেই কানাডা সরকার ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাইয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে।

কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে চাই, কিন্তু যারা প্রতারণার মাধ্যমে আসতে চায়, তাদের জন্য আমাদের দরজা বন্ধ”। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা ভিসার অপব্যবহার রোধে নতুন নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে প্রকৃত শিক্ষার্থীরা সুযোগ পান এবং প্রতারকরা বাদ পড়ে।

ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকেই ইতোমধ্যে কানাডার কলেজে ভর্তি হয়েছেন, কিন্তু ভিসা না পাওয়ায় তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভিসা এজেন্টদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও বাড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কানাডার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা, ভুয়া এজেন্ট বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করলে ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে।

কানাডা সরকার এখন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আরো কঠোর করছে এবং আবেদনকারীদের নথিপত্র যাচাইয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে; বিশ্বস্ত উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আবেদন করতে হবে।