কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্তমানে এক কঠিন অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারির পরবর্তী ধাক্কা, গবেষণা খাতে পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা; সব মিলিয়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে তাদের টিউশন ফি ও শিক্ষার্থী কৌশল নিয়ে।
একসময় কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভর করত। কিন্তু এখন সেই সহায়তা কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিকল্প উৎস খুঁজতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে আয় বাড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা অনেক ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডায় পড়াশোনা করা আগের চেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার ২০২৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বড় গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও ছোট ও আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আয় সংকটে পড়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় তারা নতুন কৌশল গ্রহণ করছে, যেমন-
- স্থানীয় শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাড়ানো
- শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব
- ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন
- বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন প্রণোদনা
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন এমন প্রোগ্রাম চালু করছে, যেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ, কর্মসংস্থান সহায়তা এবং স্থায়ী বসবাসের সুযোগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে।
তবে এই পরিবর্তনের ফলে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক চিন্তিত। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের শিক্ষার্থীরা, যারা কানাডায় পড়াশোনার খরচ বহন করতে হিমশিম খান। টিউশন ফি বাড়লে তাদের জন্য উচ্চশিক্ষা আরো দূরের স্বপ্ন হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, তারা শিক্ষার মান বজায় রেখে আর্থিক ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি এক নতুন বাস্তবতা, যেখানে শুধু ভালো রেজাল্ট নয়, বরং অর্থনৈতিক প্রস্তুতিও জরুরি।
এই পরিস্থিতিতে কানাডার উচ্চশিক্ষা খাতের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কতটা দক্ষভাবে তারা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এটি যেমন চ্যালেঞ্জ, তেমনি সুযোগও। যদি তারা সঠিক তথ্য ও প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে আসেন।
logo-1-1740906910.png)