যুক্তরাষ্ট্রে আইসিইর অভিযানে আতঙ্কে হাজারো অভিবাসী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৮

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) সম্প্রতি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ এখন বিতাড়নের ঝুঁকিতে পড়েছেন।
এপি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিই কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এমন অভিবাসীদের খুঁজে বের করছে, যারা আদালতের আদেশ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেননি। এই অভিযানের লক্ষ্য হলো অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং অবৈধভাবে বসবাসরতদের সংখ্যা কমানো।
এই অভিযানে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে লাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে আসা অভিবাসীদের ওপর। অনেকেই রাজনৈতিক আশ্রয়, পারিবারিক পুনর্মিলন বা মানবিক কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, কিন্তু তাদের আবেদন এখনো বিচারাধীন। ফলে তারা আইনি সুরক্ষা ছাড়া রয়েছেন।
আইসিই জানিয়েছে, তারা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছে এবং যাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বহিষ্কার আদেশ রয়েছে, তাদেরই লক্ষ্য করা হচ্ছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই অভিযান অনেক নিরীহ ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে বিপদে ফেলছে। বিশেষ করে যেসব পরিবারে শিশু রয়েছে, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
একজন অভিবাসন আইনজীবী বলেন, “অনেকেই এমন পরিস্থিতিতে রয়েছেন, যেখানে তারা দেশে ফিরলে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। অথচ তাদের আবেদন এখনো বিচারাধীন। এই ধরনের অভিযান মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অগ্রহণযোগ্য।”
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আদালতগুলোতে মামলার সংখ্যা এত বেশি যে, অনেক আবেদনকারীকে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। এই দীর্ঘসূত্রতা অভিবাসীদের অনিশ্চয়তায় ফেলে দেয় এবং আইসিইর অভিযান সেই অনিশ্চয়তাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বলছে, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা আনা জরুরি। তারা দাবি করছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরবে এবং আইনি পথে আসা অভিবাসীদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এই নীতির ফলে মানবিক সংকট আরো বাড়বে। অনেক অভিবাসী পরিবার এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, কখন আইসিই এসে তাদের তুলে নিয়ে যাবে, সেই ভয় তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে অভিবাসন নীতিতে ভারসাম্য আনার দাবি উঠেছে। মানবাধিকার, আইনি প্রক্রিয়া এবং জাতীয় নিরাপত্তার মধ্যে সমন্বয় করে একটি মানবিক ও কার্যকর অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।