শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৯

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসা পেতে এখন শুধু একাডেমিক যোগ্যতা নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার স্বচ্ছতাও জরুরি হয়ে উঠেছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের নতুন নীতি মতে, F-1, M-1 ও J-1 ভিসার আবেদনকারীদের গত পাঁচ বছরে ব্যবহৃত সব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ইউজারনেম জমা দিতে হবে এবং সেগুলোর প্রাইভেসি সেটিং ‘পাবলিক’ রাখতে হবে পুরো ভিসার মেয়াদকালজুড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের ভাষ্য, এই সিদ্ধান্ত জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অংশ। তারা দাবি করছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় উগ্রবাদী বা সহিংস মনোভাব ছড়ানোর ঝুঁকি থাকায় আবেদনকারীদের অনলাইন উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। বিশেষ করে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর নাগরিকদের পোস্টগুলো এখন ‘পটেনশিয়াল থ্রেট’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
এই নীতির ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হচ্ছেন পুরনো পোস্ট মুছে ফেলতে, নিজেকে সেন্সর করতে, এমনকি রাজনৈতিক বা সামাজিক বিষয়ে নীরব থাকতে। এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী একে বলেছেন “অত্যধিক ও ভীতিকর নজরদারি”।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার সংগঠনগুলোও বলছে, এই নীতি প্রথম অধ্যাদেশের পরিপন্থি, যা নাগরিকদের মতপ্রকাশ, ধর্মপালন ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই নজির অনুসরণ করে ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও ভবিষ্যতে অনুরূপ নীতি গ্রহণ করতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ডিজিটাল সেন্সরশিপ শুধু নিরাপত্তা নয়, বরং চিন্তার সংকোচন ঘটায়। শিক্ষার্থীরা যখন জানেন, তাদের অনলাইন অভিব্যক্তি রাষ্ট্রযন্ত্রের পর্যবেক্ষণে রয়েছে, তখন তারা আত্মসংযমী হয়ে পড়েন, যা সৃজনশীলতা ও জ্ঞানচর্চার জন্য হুমকি।
এই নীতি তাই শুধু অভিবাসন নয়, বরং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ভবিষ্যৎ নিয়েও গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো