যুক্তরাজ্যে ফুড ডেলিভারিতে অনিয়মিত অভিবাসী, কঠোর হচ্ছে সরকার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০৯:০৬

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত অনিয়মিত অভিবাসী বা আশ্রয়প্রার্থীরা যাতে তাদের আশ্রয় আবেদন নিষ্পত্তি হওয়ার আগে কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হতে না পারে, সে জন্য কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে দেশটির সরকার৷ যেসব প্রতিষ্ঠান অনিয়মিত অভিবাসীদের কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ দেবে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
ফ্রান্সের উপকূল থেকে ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফুড ডেলিভারি বা ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ঠিকানায় খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজে যুক্ত হচ্ছেন অনিয়মিত অভিবাসীরা৷ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে৷
এই সংবাদ গোটা ব্রিটেনে বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে৷ এরপরই নড়েচড়ে বসেছে ব্রিটিশ সরকার৷ অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷
দ্য সান জানিয়েছে, ডেলিভারু এবং জাস্ট ইট নামে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ঠিকানায় খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই অভিবাসীদের এসব কাজে নিয়োগ দিচ্ছে৷
দ্য সানের অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা গোপনীয়তার মাধ্যমে পুরো বিষয়টিতে নজর দিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷ যুক্তরাজ্যজুড়ে আশ্রয়কেন্দ্রের বিকল্প হিসেবে হোটেলে জায়গা পাওয়া অভিবাসীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এসব গ্রুপগুলোতে যুক্ত হচ্ছেন কাজ পাওয়ার আশায়৷
সংবাদপত্রটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ফুড ডেলিভারির কাজে যুক্ত হতে নির্ধারিত অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে লগইন করার জন্য এক সপ্তাহে ৪০ পাউন্ডের মতো অর্থ দিতে হয়৷
অভিবাসীরা তাদের হোটেলগুলোর পাশেই তাদের বাইক, ব্যাগ এবং ইউনিফর্মগুলো রাখেন৷ প্রতিদিন প্রায় ১৫ ঘণ্টার শিফটে কাজ করেন তারা৷
দ্য সান জানিয়েছে, তাদের একজন সাংবাদিক নিজেকে আফগান এবং চ্যানেল পেরিয়ে আসা অভিবাসী পরিচয় দিয়েছেন৷ এতেই তার কাছে ফুড ডেলিভারির কাজ করার জন্য অনেকগুলো প্রস্তাব আসতে থাকে৷
দ্য সান একটি ছবিও প্রকাশ করেছে৷ যেখানে দেখা গেছে, পুরুষ অভিবাসীরা একটি প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করা পোশাক পরে ও পিঠে ডেলিভারি ব্যাগ নিয়ে অভিবাসীদের জন্য নির্ধারিত হোটেল থেকে বের হয়ে আসছেন৷
কড়া বার্তা সরকারের
ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সীমান্ত সুরক্ষামন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা ঈগল আগামী সপ্তাহে প্রতিষ্ঠাগুলো পরিদর্শন করবেন৷ তিনি নিশ্চিত করেছেন, ব্রিটিশ সরকার এই ‘‘র্যাকেট”-এর পক্ষে দাঁড়াবে না৷
মুখপাত্র বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে এই র্যাকেটের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে৷ কারণ, এটি সৎভাবে ব্যবসা করে আসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে এবং স্থানীয়দের আয় কমিয়ে দিচ্ছে৷ ফলে ব্রিটিশ জনগণ সঙ্গত কারণে এর পক্ষে দাঁড়াবে না এবং সরকারও তা সমর্থন করবে না”।
তিনি বলেন, সরকার নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করা ঠেকাতে গ্রেপ্তার বাড়িয়েছে এবং অভিবাসন ব্যবস্থাপনা ও কাজের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আইনকে শক্তিশালী করছে৷
তথ্যসূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস