যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গেলে কোন কোন ক্যাটাগরির ভিসা পাওয়া যায়?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১১:০৯

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ বা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের উদ্দেশে যেতে আগ্রহীদের জন্য তিনটি প্রধান নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা রয়েছে। যেমন- F, M ও J ভিসা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ভিসাগুলোর আবেদনকারীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ‘পাবলিক’ রাখার নির্দেশনা জারি করেছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ভিসাগুলোর ধরন, যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানা জরুরি।
F ভিসা: একাডেমিক শিক্ষার্থীদের জন্য
F-1 ভিসা হলো যুক্তরাষ্ট্রে একাডেমিক শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহীদের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত ভিসা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাইস্কুল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।
মূল বৈশিষ্ট্য:
- আবেদনকারীকে SEVP-স্বীকৃত (Student and Exchange Visitor Program) প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে।
- পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হতে হবে।
- পড়াশোনার পাশাপাশি সীমিত সময়ের জন্য অন-ক্যাম্পাস কাজের অনুমতি থাকে।
- কোর্স শেষে OPT (Optional Practical Training) এর মাধ্যমে ১২ মাস পর্যন্ত কাজের সুযোগ।
M ভিসা: ভোকেশনাল বা কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য
M-1 ভিসা মূলত কারিগরি বা পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহীদের জন্য। যেমন: কুকিং, ডিজাইন, মেকানিক্যাল ট্রেনিং ইত্যাদি।
মূল বৈশিষ্ট্য:
- একাডেমিক নয়, বরং প্র্যাকটিক্যাল স্কিলভিত্তিক কোর্স
- কোর্স চলাকালে কাজের অনুমতি নেই
- কোর্স শেষে সীমিত সময়ের জন্য প্রশিক্ষণভিত্তিক কাজের সুযোগ
J ভিসা: এক্সচেঞ্জ ভিজিটরদের জন্য
J-1 ভিসা হলো সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত বিনিময় প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ব্যক্তিদের জন্য। এর আওতায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক, ইন্টার্ন, ক্যাম্প কাউন্সেলর, অপেয়ার ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
মূল বৈশিষ্ট্য:
- আবেদনকারীকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট অনুমোদিত স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
- অনেক ক্ষেত্রে “Two-Year Home Residency Requirement” প্রযোজ্য হয়, অর্থাৎ প্রোগ্রাম শেষে নিজ দেশে অন্তত দুই বছর থাকতে হয়।
- কিছু প্রোগ্রামে সীমিত কাজের সুযোগ থাকে।
নতুন নিরাপত্তা নির্দেশনা: সোশ্যাল মিডিয়া ‘পাবলিক’ রাখতে হবে
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, “প্রতিটি ভিসা অনুমোদন একটি জাতীয় নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত”। তাই F, M ও J ভিসার আবেদনকারীদের তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল পাবলিক রাখতে বলা হয়েছে, যাতে তাদের পরিচয় ও উদ্দেশ্য যাচাই করা যায়।
২০১৯ সাল থেকেই ভিসা ফর্মে সোশ্যাল মিডিয়া আইডেন্টিফায়ার দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এবার সেটিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে প্রোফাইলের গোপনীয়তা কমিয়ে ‘পাবলিক’ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আবেদন প্রক্রিয়ার সারসংক্ষেপ
১. প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত করুন (F ও M-এর ক্ষেত্রে SEVP স্বীকৃত, J-এর ক্ষেত্রে স্পন্সর)
- DS-160 ফর্ম পূরণ করুন
- SEVIS ফি পরিশোধ করুন
- ভিসা সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ করুন
- সাক্ষাৎকারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রমাণাদি উপস্থাপন করুন
- সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল পাবলিক রাখুন
এই তিনটি ভিসা যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথ। তবে আবেদনকারীদের উচিত প্রতিটি ভিসার নিয়ম-কানুন ও সীমাবদ্ধতা ভালোভাবে বোঝা এবং প্রস্তুতি নেওয়া।
তথ্যসূত্র: ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অফিসিয়াল পেজ