কোস্টারিকায় আমেরিকা থেকে বিতাড়িত ২০০ অভিবাসীর মুক্তির নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ০৮:৪৭

কোস্টারিকার একটি আদালত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত ২০০ অভিবাসীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই অভিবাসীরা আফগানিস্তান, চীন, ঘানা, ভারত ও ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক এবং তাদের মধ্যে ৮০ জনের বেশি শিশু রয়েছে।
কী ঘটেছিল?
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কোস্টারিকার মধ্যে একটি চুক্তির আওতায় এই অভিবাসীদের কোস্টারিকায় পাঠানো হয়, যদিও তারা কেউই কোস্টারিকার নাগরিক নন। তাদের রাখা হয় দক্ষিণ কোস্টারিকার পুন্তারেনাসে অবস্থিত CATEM (Temporary Migrant Care Centre) নামক একটি আশ্রয়কেন্দ্রে, যেখানে তারা ৬০ দিনের বেশি সময় ধরে আইনজীবী বা ভাষাগত সহায়তা ছাড়া আটক ছিলেন।
আদালতের রায়
কোস্টারিকার সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারকের মধ্যে চারজন রায় দেন যে, এই অভিবাসীদের ব্যক্তিগত শুনানি ছাড়া চলাফেরার স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, তাদের বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত করা হয়েছে এবং আশ্রয় প্রার্থনার সুযোগ সম্পর্কে জানানো হয়নি, যা তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে।
আদালত অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেক অভিবাসীর অভিবাসন অবস্থা নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও কিছু অভিবাসী ইতোমধ্যে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে গেছেন, তবে এখনো ২৮ জন CATEM-এ অবস্থান করছেন, যাদের মধ্যে ১৩ জন শিশু।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তারা বলছে, তৃতীয় দেশে অভিবাসী পাঠানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিমালার পরিপন্থি, বিশেষ করে যদি সেই দেশে নির্যাতন বা মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি একটি নিম্ন আদালতের আদেশ বাতিল করেছে, যেখানে বলা হয়েছিল এই ধরনের অভিবাসীদের তৃতীয় দেশে পাঠানোর আগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত।
এই রায় শুধু কোস্টারিকায় নয়, বরং আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে উঠতে পারে। এটি দেখিয়েছে, অভিবাসীদের মানবাধিকার রক্ষায় আদালত কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, এমনকি রাষ্ট্রীয় চুক্তির বিপরীতেও।
তথ্যসূত্র: বিবিসি