Logo
×

Follow Us

উত্তর আমেরিকা

অভিবাসী দমনে ‘স্বৈরাচারী’ হয়ে উঠছেন ট্রাম্প

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৬:২০

অভিবাসী দমনে ‘স্বৈরাচারী’ হয়ে উঠছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নিয়ে বরাবরই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতার মসনদে বসার পর থেকেই এ বিষয়ে নেওয়া তার পদক্ষেপের কারণে বহুবার সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি। বরাবরই এসব উপেক্ষা করে নিজের নীতিতেই অটল থেকেছেন ট্রাম্প। এবার অতীতের সব একগুঁয়েমির মাত্রা ছাড়িয়ে নিজের অভিবাসী বিদ্বেষ প্রতিষ্ঠায় রীতিমতো স্বৈরাচারী পথে হাঁটলেন ট্রাম্প। তার অভিবাসন হঠানো নীতিতে ইতোমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির ‘অভিবাসী রাজ্য’ হিসেবে পরিচিত ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। যার ঢেউ আছড়ে পড়ছে পুরো দেশজুড়েই। শুক্রবার শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ লস অ্যাঞ্জেলেসে এখন সহিংস সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।

১০ জুন পর্যন্ত টানা ৫ দিন ধরেই চলছে এ বিক্ষোভ, ধরপাকড়। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরে প্রায় ৪ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের মতো বিতর্কিত পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। এখানেই শেষ নয়, ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েনেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একের পর এক এমন সিদ্ধান্তকে ‘স্বৈরাচারী পদক্ষেপ’ বলে নিন্দা করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান। 

৯ জুন নিউসম জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন লস অ্যাঞ্জেলেসে আরো ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করেছেন। এর আগেও ২ হাজার সেনা মোতায়েন করেছেন তিনি। তাদের মধ্যে ১৭০০ সেনা লস অ্যাঞ্জেলেসে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ১৯৬৫ সালের পর প্রথমবার কোনো প্রেসিডেন্ট রাজ্যের গভর্নরের অনুমতি না নিয়েই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করলেন। গভর্নরের মতামত ছাড়াই লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন গভর্নর নিউসম।

ক্যালিফোর্নিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এই পদক্ষেপকে অবৈধ বলে বিবেচনা করছে। তারা অভিযোগ করেছেন, এই মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করছে এবং ফেডারেল সরকারের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছে।

৯ জুন সান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালতে করা মামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং প্রতিরক্ষা বিভাগকে বিবাদী করা হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা বলেছেন, ‘ট্রাম্পের সেনা মোতায়েনের পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে রাজ্যের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করেছে। তাই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে বেআইনি ঘোষণা করতে আদালতকে অনুরোধ করা হবে। সে সঙ্গে বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে।’

এদিকে অভিবাসীদের ধরপাকড়ের প্রতিবাদে পঞ্চম দিনেও লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ হয়েছে। যা টেক্সাসসহ বোস্টন, হিউস্টন এবং ফিলাডেলফিয়া শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক, শিকাগো ডালাস, আটালান্টাতেও বিক্ষোভ হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে বিক্ষোভে ৬০০টিরও বেশি রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। শুক্রবার বিক্ষোভ শুরুর পরপরই একটি কর্মস্থল থেকে ৪৪ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই দিনে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে আরো ৭৭ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, লুটপাট, সহিংসতা এবং অন্যান্য অভিযোগ আনা হয়েছে।

৭ জুন রাতে বিক্ষোভে ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ ২৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে। এছাড়া রোববার পুলিশের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে শহরের কেন্দ্র থেকে আরো ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এ দিন সান ফ্রান্সিসকোতে আরো ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তথ্যসূত্র: দৈনিক যুগান্তর

Logo