
যুক্তরাষ্ট্রে আবারো শিক্ষাঋণের বাধ্যতামূলক কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে। এর ফলে ৫০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ঋণের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় পাঁচ বছরের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল শিক্ষাঋণের কিস্তি পরিশোধ। তবে ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি সেই সময়সীমা তুলে নিয়েছেন। ফলে গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় শিক্ষাঋণের বাধ্যতামূলক কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ট্রান্স ইউনিয়নের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লি ওয়াইজ বলেন, বেশির ভাগ মার্কিন পরিবার তাদের মাসিক বাজেট তৈরি করেছিলেন ঋণ পরিশোধ ছাড়া। ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে এখন হঠাৎ করে বড় অঙ্কের এই কিস্তি যোগ হওয়ায় তাদের আর্থিক ভারসাম্য ভেঙে পড়ছে।
এনপিআরের এক প্রতিবেদনে কয়েকজন সাধারণ ঋণগ্রহীতার অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, তারা এখন মাস শেষে খরচ মেটাতে পারছেন না, আবার কেউ কেউ দ্বিতীয় চাকরির চিন্তা করছেন শুধু বাড়ি ভাড়ার টাকাটা জোগাড় করতে।
ঋণগ্রহীতা ক্যাথরিন উটেন বলেন, মাসের শেষে খরচ চালানোই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাইকেল হ্যারিসের বক্তব্য, আমি জানি না কী করব। মনে হচ্ছে, তারা শিগগির আমার আয় থেকে কিস্তি কেটে নিতে শুরু করবে। জে ডিয়া কাস্তিয়ো বলেন, ভাড়া মেটাতে হলেও এখন দ্বিতীয় চাকরি নিতে হবে।
এদিকে ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, হঠাৎ করে এত বড় অঙ্কের কিস্তির জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না।
জেসিকা ডে লা বার্তো নামে একজন জানান, আমি এক হাজার ডলারের কিস্তির জন্য কোনো পরিকল্পনাই করিনি। অ্যামি টিবল বলেন, প্রতি মাসে ৯০০ ডলার কিস্তি দিতে গিয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
চার্লি ওয়াইজ আরো জানান, যারা এই কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করতে পারছেন না, তাদের ক্রেডিট স্কোরে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে যারা আগে ভালো স্কোর ধরে রেখেছিলেন, তাদের ওপর প্রভাব আরো বেশি হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে বাড়ি কেনা বা গাড়ির ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে পারেন তারা।
ঋণগ্রস্তদের প্রতি ওয়াইজের পরামর্শ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পেমেন্ট শুরু করুন। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ঋণদাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকল্প বা সহায়তা কর্মসূচির সন্ধান নিন।
এদিকে সংকটময় সময়ে অনেকের জীবনযাত্রা বদলে দিতে হচ্ছে। কেউ প্রয়োজনীয় খরচ কমাচ্ছেন, কেউ আবার নতুন আয়ের পথ খুঁজছেন।
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার প্রশাসন ৫০ লাখেরও বেশি ছাত্রের ঋণ বাতিল করেছে। তবে এপ্রিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনের শিক্ষা বিভাগ জানিয়ে দেয়, এখন আর কোনো গণঋণ ক্ষমা করা হবে না। সর্বশেষ গত ৫ এপ্রিল থেকে শিক্ষাঋণ পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়।