Logo
×

Follow Us

উত্তর আমেরিকা

কাবেরী মৈত্রেয়, নিউ ইয়র্ক থেকে

অনড় হার্ভার্ডকে ট্রাম্পের আবার 'শাস্তি'!

২০০ কোটির পর এবার ৪৫ কোটির তহবিল কাটছাঁট ট্রাম্প প্রশাসনের

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১০:৫৮

অনড় হার্ভার্ডকে ট্রাম্পের আবার 'শাস্তি'!

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান আবার কাটছাঁট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে ‘মাথা নত’ না করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকাতেই ‘শাস্তির’ খড়ক নামল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। অতীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি আর্থিক অনুদান বন্ধের ঘোষণা করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। গত মঙ্গলবার তারা জানাল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো ৪৫ কোটি ডলার আর্থিক অনুদান বন্ধ করা হচ্ছে। এর আগের দিন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে অনেক বিষয়ে তাদের ‘দৃষ্টিভঙ্গির মিল’ আছে।

সোমবারই যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা সচিব লিন্ডা ম্যাকমোহনকে একটি চিঠি দেন হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গার্বার। সেই চিঠিতে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘ইসরায়েলের হামলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে বেশ কিছু জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ তবে তিনি সরাসরি পড়ুয়াদের রাজনৈতিক যোগের তত্ত্ব খারিজ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন। মঙ্গলবার তারা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইহুদি পড়ুয়ারা অপমানিত এবং আহত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সেই কারণেই নতুন করে অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

তবে এসব সংস্কার করে নিজেদের তহবিল কাটছাঁট বন্ধ করতে পারেনি হার্ভার্ড। মঙ্গলবার এক মামলার নথিতে বিষয়টি উঠে আসে। এতে দেখা যায়, মে মাসে হার্ভার্ডকে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট তহবিল বন্ধের চিঠি দেয়। সেখানে বলা হয়, যারা তহবিল পায়, তাদের সাধারণত সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে ‘কোনো সংশোধনের সুযোগ নেই।’

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কোনো রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত নয় দাবি করে প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে মতের আরো বৈচিত্র্য প্রয়োজন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের তাদের ব্যক্তিগত গুণ ও যোগ্যতা দেখে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়, বর্ণ দেখে নয়।

মঙ্গলবার মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানবসেবা দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, ‘হার্ভার্ডের ৪৫ কোটি ডলারের অনুদান বাতিল করা হয়েছে।’ আগের সপ্তাহেই কাটা হয়েছিল ২২০ কোটি ডলার। বিশ্ববিদ্যালয়টি বৈষম্যমূলক ‘গভীর সমস্যায়’ জর্জরিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

হার্ভার্ড বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে গেছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসন অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে।

হোয়াইট হাউসের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লাগামহীন ইহুদিবিদ্বেষ হচ্ছে। তাই সংখ্যালঘুদের জন্য নেওয়া বৈচিত্র্যভিত্তিক কর্মসূচিগুলো বন্ধ করা জরুরি। এই যুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নানাভাবে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

তবে মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের ‘অ্যান্টি-সেমিটিজম টাস্কফোর্স’ এক বিবৃতিতে হার্ভার্ডকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘নৈতিকতার বাহাদুরি ও বৈষম্যের উর্বর জমি’ বলে আখ্যা দেয়।

টাস্কফোর্সের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, হার্ভার্ডের নিজস্ব তদন্তেই দেখা গেছে, ইহুদি শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অপমান, হামলা ও ভীতি প্রদর্শনের শিকার হয়েছেন।

তাদের দাবি, ‘হার্ভার্ড এবং এর নেতৃত্ব একাধিক গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। আইনসম্মত ও উচ্চশিক্ষার মানদণ্ড হিসেবে হারানো সুনাম ফিরে পেতে তারা কঠিন লড়াইয়ের মুখে রয়েছে।’

Logo