আমেরিকায় আর দামি পণ্য পাঠাবে না ডিএইচএল এক্সপ্রেস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৭

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জোর করে চাপিয়ে দেয়া নয়া শুল্ক নীতির জেরে ৮০০ ডলারের বেশি দামি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সাময়িকভাবে বন্ধ করছে বহুজাতিক পণ্য ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল এক্সপ্রেস। ফলে বিভিন্ন দেশের প্রবাসী, যারা নানা প্রয়োজনে প্রিয়জনদের কাছে মূল্যবান সামগ্রী পাঠাতেন বা পাঠানোর চিন্তা করছেন, তারা পড়বেন বিপাকে।
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পণ্য দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ডিএইচএল বলেছে, সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্বের যে কোনো দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে মার্কিন ভোক্তাদের কাছে পাঠানো চালান তারা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখবে। প্রতিষ্ঠানটি এও জানিয়েছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতর বা ‘বিজনেস টু বিজনেস’ এর আওতায় থাকা চালানগুলো এখনো চালু রাখবে তারা। তবে সেগুলোর ক্ষেত্রেও পণ্য পৌঁছাতে দেরি হতে পারে।
এর আগে ২ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত মূল্যের পণ্য কাগজপত্রের সামান্য ঝামেলা পেরিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারত। তবে চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্পের নতুন শুল্ককাঠামো ঘোষণার পর এ সীমা কমিয়ে আনা হয়।
ডিএইচএল বলেছে, ‘এ পরিবর্তনের ফলে শুল্ক বিভাগে আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে দিনরাত সেগুলো সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।'
তারা জানিয়েছে, এ অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। তবে উৎস যে দেশেই হোক না কেন, ৮০০ ডলারের বেশি মূল্যের চালান পৌঁছাতে কয়েক দিন দেরি হতে পারে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা ৮০০ ডলারের কম মূল্যের চালানগুলো আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাবে এবং ন্যূনতম কাগজপত্রের বাধা পেরিয়ে সেগুলো ছাড় পাবে বলে আশা করছে।
তবে ৮০০ ডলারের কম মূল্যের পণ্যের ওপরও কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউস। বিশেষ করে চীন ও হংকং থেকে পাঠানো চালানগুলোর ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হচ্ছে। ২ মে এ-সংক্রান্ত আইনি ফাঁকফোকর বন্ধ করে দেবে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে কম মূল্যের পণ্যও শুল্ক ছাড়া আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
‘ডি মিনিমিস’নামের ওই তথাকথিত নিয়ম বাতিল ফাস্ট ফ্যাশন ব্র্যান্ড শিইন এবং স্বল্প মূল্যের রিটেইল জায়ান্ট টেমুর জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলবে।
শিইন ও টেমু; উভয়ই এ বিষয়ে সতর্ক করে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নীতিমালা ও শুল্ক পরিবর্তনের কারণে তাদের পণ্যের দাম বাড়াবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, চীনে অবস্থানরত ‘অনেক ব্যবসায়ী’ অবৈধ পণ্য লুকিয়ে প্রকৃত তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান।
এক নির্বাহী আদেশে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তাদের এসব পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো ‘সিনথেটিক অপিওয়েডের (রাসায়নিকভাবে তৈরি একধরনের ব্যথানাশক) সরবরাহ শৃঙ্খলকে মোকাবিলা করা। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এ সংকট তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চীনের পাঠানো অপিওয়েড।
চীনে বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর মাদকবিরোধী আইন রয়েছে উল্লেখ করে বেইজিং জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের যে ফেন্টানিল সমস্যার কথা বলছে, সেটা তাদের ‘অভ্যন্তরীণ সংকট’।
কাবেরী মৈত্রেয়, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র