সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) শিশু সুরক্ষা ও কল্যাণে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি দেশটি ফেডারেল ডিক্রি-ল’ নং ১২, ২০২৫ জারি করেছে, যেখানে শিশুদের অভিভাবকত্ব ও লালন-পালনের নিয়মাবলি স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে অজ্ঞাত পিতামাতার শিশুদের জন্য অভিভাবকত্বের পথ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, ইউএইতে বসবাসরত পরিবারগুলো, যার মধ্যে প্রবাসীরাও অন্তর্ভুক্ত, নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অভিভাবকত্বের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন অবশ্যই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পক্ষ থেকে যৌথভাবে জমা দিতে হবে এবং তাদের বয়স কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে। নির্বাহী বিধিমালায় বিস্তারিত শর্তাবলি ও মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে, যাতে শিশুদের জন্য নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত হয়।
আইনে একক নারীদের জন্যও আলাদা অভিভাবকত্বের পথ নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনকারী নারীর বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হবে এবং তাকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে হবে। অর্থাৎ, শিশুর লালন-পালন ও নিজের জীবিকা নির্বাহের সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। এভাবে অভিভাবকত্বের সিদ্ধান্তে শিশুর সর্বোচ্চ স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
নতুন আইনে অভিভাবক পরিবার ও নারীদের জন্য স্পষ্ট দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানসিক সহায়তা এবং পরিচয় ও গোপনীয়তা রক্ষার বাধ্যবাধকতা। অভিভাবকত্বের প্রতিটি ধাপে শিশুর মানসিক, সামাজিক ও শারীরিক কল্যাণকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
আইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নজরদারি ব্যবস্থা। একটি বিশেষায়িত কমিটি নিয়মিতভাবে অভিভাবকত্বের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে। যদি দেখা যায় শর্ত পূরণ হচ্ছে না বা আইন লঙ্ঘন হচ্ছে, তবে শিশুকে অভিভাবকত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে ছোটখাটো লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সংশোধনমূলক পরিকল্পনা দেওয়া হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইউএই সরকার জানিয়েছে, এই আইন দেশের শিশু সুরক্ষা কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করবে। এটি ন্যায়বিচার, সহমর্মিতা ও পরিবারকে ক্ষমতায়নের প্রতীক। একই সঙ্গে শিশুদের অধিকার রক্ষা, জীবনমান উন্নয়ন এবং সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি সমন্বিত পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।
logo-1-1740906910.png)