
স্কটল্যান্ডে জন্মের চেয়ে মৃত্যু বেশি হলেও দেশটির জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০২৪ সালে স্কটল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রথমবারের মতো ৫.৫ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। এই বৃদ্ধির মূল কারণ বিদেশ থেকে আগত অভিবাসীদের সংখ্যা স্থানীয়দের চেয়ে বেশি।
জাতীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৬৮ হাজার ২০০ মানুষ স্কটল্যান্ড ছেড়েছেন, কিন্তু ১ লাখ ২৪ হাজার ৬০০ জন নতুন করে এসেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৭৫% মানুষ এসেছেন বিদেশ থেকে। ফলে নেট অভিবাসন দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৪০০ জন।
২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর জন্মের চেয়ে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। এই ‘প্রাকৃতিক পরিবর্তন’ আগামী দুই দশকে আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অভিবাসন এই ঘাটতি পূরণ করছে এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে স্কটল্যান্ডের জনসংখ্যা ৫.৮ মিলিয়নে পৌঁছাতে পারে।
স্কটল্যান্ডে অভিবাসনের বড় উৎস এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার। ২০২২-২৩ সালে ৮৩ হাজার ৯৭৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী স্কটল্যান্ডে পড়াশোনা করেছেন। যদিও ব্রেক্সিটের পর EU শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে, কিন্তু চীন, ভারতসহ অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। চীন থেকে ১৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী এসেছেন, যা ২০১৯-২০ সালের তুলনায় অনেক বেশি।
এই শিক্ষার্থীরা স্কটল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ ফি প্রদান করেন, যা অর্থনীতিতে ৪ থেকে ৬ বিলিয়ন পাউন্ড অবদান রেখেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমায় কিছু বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ডান্ডি, আর্থিক সংকটে পড়েছে।
স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা পূরণে স্কটল্যান্ডে কর্মী আসছেন। স্বাস্থ্য ও সেবা খাতে ভিসার সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। এছাড়া ইউক্রেন ও আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় কয়েক হাজার মানুষ এসেছেন। বর্তমানে স্কটল্যান্ডে ৬ হাজার ১০৭ জন আশ্রয়প্রার্থী রয়েছেন।
গ্লাসগো, মিডলোথিয়ান ও এডিনবরোতে অভিবাসনের হার সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, স্কটল্যান্ডে বসবাসরত প্রতি ১০ জনে একজন বিদেশে জন্মেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসন স্কটল্যান্ডের জনসংখ্যা ও অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি