শীতের মৌসুম শুরু হলে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসুরা এমন জায়গা খোঁজেন, যেখানে আবহাওয়া আরামদায়ক, খরচ তুলনামূলক কম এবং অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়। এ সময় ওমান হয়ে ওঠে অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য। ডিসেম্বর মাসে দেশটির আবহাওয়া সাধারণত মৃদু ও মনোরম থাকে। রাজধানী মাসকাটে দিনের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ১৮ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। পাহাড়ি ও মরুভূমি অঞ্চলে তাপমাত্রা আরো কিছুটা কম থাকে, যা ভ্রমণের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।  

এই সময়ে পর্যটকরা নানা ধরনের আউটডোর কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন। হাইকিং, ট্রেকিং, ডাইভিং, পাখি দেখা কিংবা মরুভূমি ভ্রমণ; সবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ঐতিহাসিক দুর্গ, জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা ঘুরে দেখার জন্যও ডিসেম্বরকে উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়। মাসকাটে সকালে সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদের প্রাঙ্গণে হাঁটা কিংবা মুত্রাহ সুকে ধূপের গন্ধে ভরা বাজারে কেনাকাটা পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। সন্ধ্যায় কার্নিশে হাঁটা বা সূর্যাস্তের সময় ধাও ক্রুজে ভ্রমণও জনপ্রিয়।  

ওমানের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও প্রবাসী সম্প্রদায়ের কারণে ডিসেম্বর মাসে দেশটিতে স্থানীয় উৎসবের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উদযাপনও দেখা যায়। মরুভূমি অঞ্চলে ঠান্ডা আবহাওয়ায় রিমাল আল শরকিয়া বা এম্পটি কোয়ার্টার ভ্রমণ বিশেষ অভিজ্ঞতা দেয়। উপকূলীয় এলাকায় ডাইমানিয়াত দ্বীপে স্নরকেলিং, মাসকাটে ডলফিন দেখা কিংবা সালালার শান্ত সমুদ্রসৈকতে হাঁটা পর্যটকদের আনন্দ দেয়।  

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য ওয়াদি আল শাবের নীলাভ জলাধার বিশেষ আকর্ষণ। মরুভূমির বালিয়াড়িতে সূর্যাস্ত দেখা বা রাতের আকাশে তারা গণনা করার অভিজ্ঞতা ভ্রমণকারীদের মনে দাগ কাটে। দক্ষিণে সালালা তার নারকেল বাগান ও সৈকতের জন্য পরিচিত, যা শীতকালে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে।  

মুসান্দাম প্রদেশকে শীতকালীন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে বিলাসবহুল আবাসন, ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যটকদের আকর্ষণ করার পরিকল্পনা চলছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতি ও বিনিয়োগের সুযোগও বাড়বে।  

ভারতীয় পর্যটকদের জন্য মাসকাট ডিসেম্বর মাসে সবচেয়ে সাশ্রয়ী আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরাসরি ফ্লাইটের সুবিধায় তারা সহজেই ওমানে পৌঁছাতে পারেন।