সৌদি আরব ধীরে ধীরে মদ বিক্রি ও ব্যবহারের নিয়ম শিথিল করছে। সম্প্রতি দেশটির সরকার নীরবে এমন একটি পরিবর্তন এনেছে, যাতে নির্দিষ্ট কিছু অমুসলিম প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি কার্ডধারী প্রবাসী এখন রিয়াদের একটি দোকান থেকে মদ কিনতে পারছেন। আগে এই দোকানটি শুধু বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য সীমিত ছিল।  

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সেমাফরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি কার্ডধারীরা রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত দোকান থেকে মদ কিনতে পেরেছেন। তবে সরকার এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। গ্রাহকরা জানিয়েছেন, তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানতে পেরেছেন।  

এ পদক্ষেপ সৌদি আরবের পর্যটন খাতকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার অংশ। দেশটি ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ১৫ কোটি পর্যটক আকর্ষণ করার লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য তারা হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র ও বিভিন্ন পর্যটন অবকাঠামোতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। তবে প্রতিবেশী উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এখনো পিছিয়ে রয়েছে।  

সৌদি আরব ২০১৯ সালে প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি কর্মসূচি চালু করে, যাতে উচ্চ আয়ের বিদেশি কর্মী ও বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হন। বর্তমানে এ কর্মসূচি আরো বিস্তৃত হয়েছে। মাসে ৮০ হাজার রিয়াল (প্রায় ২১ হাজার ডলার) আয়কারী বা নির্দিষ্ট পেশায় কর্মরত প্রবাসীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন।  

সেমাফরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ধীরে ধীরে মদের ওপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করছে। তবে একই সঙ্গে ইসলামি বিধিনিষেধ ও পবিত্র দুই মসজিদের অভিভাবক হিসেবে তাদের দায়িত্বও বজায় রাখছে।  

দীর্ঘদিন ধরে কূটনীতিক ছাড়া অনেক প্রবাসী নিজ বাড়িতে মদ তৈরি করতেন। সাধারণত তা বিক্রি না করলে বা বড় আকারে ব্যবহার না করলে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নিত না। এছাড়া সৌদি সমাজের প্রভাবশালী পরিবার ও কর্মকর্তাদের বাসায়ও মদ পরিবেশনের খবর আগে থেকেই প্রচলিত।  

গত কয়েক বছর ধরে মদ সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করার গুঞ্জন চলছিল। অনেক হোটেল ও রেস্টুরেন্টে ইতোমধ্যে নন-অ্যালকোহলিক ককটেল ও অ্যালকোহলমুক্ত বিয়ার পরিবেশন করা হচ্ছে।  

২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে সৌদি আরবে বড় সামাজিক পরিবর্তন এসেছে। সিনেমা চালু, নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে দেশটি ধীরে ধীরে বিনোদন ও পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিচ্ছে।