সৌদি আরব সরকার ঘোষণা করেছে, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হজে অংশ নিতে পারবেন না। হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে প্রতিটি দেশের জন্য কঠোর নির্দেশনা পাঠিয়েছে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।  

সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হজে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রত্যেক ব্যক্তিকে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ‘স্বাস্থ্যঝুঁকিমুক্ত’ প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এই প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে নুসুক মাসার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বৈধ স্বাস্থ্যসনদ ইস্যু করতে হবে।  

সৌদি সরকারের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, যেসব হজযাত্রীর শরীরের প্রধান অঙ্গ অকার্যকর, তারা হজে অংশ নিতে পারবেন না। এর মধ্যে রয়েছে:  

- ডায়ালাইসিস নির্ভর কিডনি রোগ  

- গুরুতর হৃদরোগ  

- সব সময় অক্সিজেন প্রয়োজন হয় এমন ফুসফুসের রোগ  

- ভয়াবহ লিভার সিরোসিস  

- গুরুতর স্নায়বিক বা মানসিক রোগ  

- স্মৃতিভ্রষ্টতা  

- অতি বয়স্ক ব্যক্তি  

- শেষ প্রান্তিকের গর্ভাবস্থা বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা  

এছাড়া সংক্রামক রোগ যেমন যক্ষ্মা, ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বর এবং কেমোথেরাপি বা নিবিড় ইমিউনোথেরাপি নিচ্ছেন এমন ক্যান্সার রোগীরাও হজে যেতে পারবেন না।  

নুসুক মাসা হলো সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহবিষয়ক একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যসনদ ইস্যু করা হবে। সৌদি সরকার জানিয়েছে, কোনো দেশের হজযাত্রীর স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলে সংশ্লিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, “নিরাপদ হজ ব্যবস্থাপনায় শারীরিক সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।” তিনি জানান, হজ এজেন্সিগুলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের দুইজন চিকিৎসক একটি ওয়ার্কশপে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে এই স্বাস্থ্যবিধি ও প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

সৌদি সরকারের নতুন নির্দেশনায় হজযাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্যসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে হজযাত্রা আরো নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্তদের জন্য এটি একটি বড় সীমাবদ্ধতা হয়ে দাঁড়াবে।