দুবাই ট্রেড সেন্টারের পাশে শেখ জায়েদ রোডে জমকালো আয়োজনে উদ্বোধন হলো এক প্রবাসী বাংলাদেশির মালিকানায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফেমাস রিয়েল এস্টেট। যার মালিকানায় রয়েছেন দুবাই প্রবাসী বাংলাদেশি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সন্তান বোরহান চৌধুরী। ২৪ অক্টোবর শুক্রবার রাতে দুবাইয়ের ট্রেড সেন্টারের পাশে এফিআই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে শেখ জায়েদ রোডের মতো অভিজাত এলাকায় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান স্থাপনকে চমক হিসেবেই দেখছেন দুবাই প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাই এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে লন্ডন, ওমান ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রবাসী ব্যবসায়ী, সামাজিক সংগঠক ও মিডিয়া প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বোরহান চৌধুরী জানান, তার প্রতিষ্ঠান প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য রিয়েল এস্টেট খাতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। তিনি জানান, দুবাইতে ইনভেস্ট করা মানে নিশ্চিন্তে ইনভেস্ট করা। এখানে সরকারের সহযোগিতা সব সময় থাকে। দুবাই সরকারের সাথে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টগুলো সরাসরি যুক্ত থাকে। এখানে কেউ প্রপার্টি নিলে সরকার তাকে ১০ বছরের জন্য গোল্ডেন ভিসা দেয়। এই দেশ সেফ, আইকনিক এবং ইনভেস্টর-ফ্রেন্ডলি। আমাদের লক্ষ্য প্রবাসীদের জন্য নিরাপদ বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা।

বোরহান চৌধুরী আরো জানান, তার এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমানে ১০০ জন প্রবাসী বাংলাদেশির চাকরি হয়েছে। তিনি চান দেশের  তরুণরা দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে এই খাতে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলুক। 

অনুষ্ঠানে অতিথিরা ফেমাস রিয়েল এস্টেটের সফলতা কামনা করেন এবং এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দুবাইয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আলহাজ ইয়াকুব সৈনিক বলেন, বাংলাদেশিরা দুবাই ও আজমানে বড় বড় প্রজেক্টে ইনভেস্ট করছেন। বাংলাদেশ সরকার যদি আমিরাত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদার করে, তবে রেমিট্যান্স বাড়বে এবং প্রবাসীরা আরো উৎসাহ পাবেন।

বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিপিডিএল (CPDL) প্রেসিডেন্ট ইফতেখার হোসেন বলেন, দুবাই এখন ব্যবসার জন্য অন্যতম হাব। বাংলাদেশিদেরও উচিত এই সুযোগ কাজে লাগানো। ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানিরা যেমন বড়ভাবে ইনভেস্ট করছে, আমরাও পারি। আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলে তারা আমাদের দেশেও ইনভেস্ট করবে।

অন্যদিকে, দুবাইয়ের ব্যবসায়ীদের একজন সিআইপি নজরুল ইসলাম জানান, তিনি ৩৪ বছর ধরে দুবাইতে আছেন। এখন দেখছেন রিয়েল এস্টেটে ইনভেস্ট করে অনেকেই ভালো প্রফিট পাচ্ছে। দুবাইয়ের আরেক ব্যবসায়ী সিরাজুল হক নওয়াব বলেন, আরব আমিরাতে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশি আছেন। তাদের সবার উচিত একে অপরকে সহযোগিতা করা। ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানিরা যেমন রিয়েল এস্টেটে একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করে, প্রবাসী বাংলাদেশিরাও একত্রে এগিয়ে গেলে রিয়েল এস্টেট খাতে বড় ভূমিকা রাখা যাবে। অতিথিরা ফেমাস রিয়েল এস্টেটের সফলতা ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন দুবাইয়ের সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইয়াকুব সৈনিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট সিপিডিএলের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, ভেজিটেবল মার্কেট ব্যবসায়ী জালাল উদ্দীন মদিনা, নজরুল ইসলাম, আল-আইন ব্যবসায়ী আজগর হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ওমানের মূসা চৌধুরী, রবিউল হোসেন, কমিউনিটি নেতা নওয়াব সিরাজুল ইসলামসহ আমিরাতের রিয়েল এস্টেটের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও প্রবাসী বিশিষ্টজনরা।

কোম্পানির কর্ণধার বোরহান চৌধুরী আরো বলেন, "সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের অন্যতম সেরা বিনিয়োগের গন্তব্য। এখানে নিজেদের ফেমাস রিয়েল এস্টেট কোম্পানি চালু করতে পেরে আমি গর্বিত। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের অভিজ্ঞতা, উদ্ভাবনী ডিজাইন এবং বিশ্বমানের নির্মাণশৈলী এই বাজারে একটি বিশেষ স্থান তৈরি করবে। এই সাফল্য শুধু আমাদের নয়, বরং বিশ্বের বুকে থাকা সকল বাংলাদেশি উদ্যোক্তার সাফল্য।" যাদের রিয়েল এস্টেট সম্পর্কে অভিজ্ঞতা রয়েছে বা নতুন তাদের জন্য আমাদের কোম্পানির মাধ্যমে ট্রেনিং করিয়ে চাকরির ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কর্ণধার।

অংশগ্রহণকারীরা ফেমাস রিয়েল এস্টেটের সফলতা ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। বক্তারা বলেন, দুবাইয়ের মতো স্থিতিশীল অর্থনীতির দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করবে।