বাংলাদেশ থেকে দক্ষ, আধাদক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইরাক সরকার। এ বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ইরাক যৌথ কমিটির বৈঠকে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১৩ ও ১৪ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন বলে জানিয়েছে বাসস।

বৈঠকে নিরাপদ, নিয়মিত ও সুশৃঙ্খল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিতকরণ, ইরাকে কর্মরত অনিয়মিত বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়মিতকরণ এবং জনশক্তি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনার শেষে একটি ‘রেকর্ড অব ডিসকাশন’ স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে উভয় পক্ষ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ইরাক সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োগে ভিসা প্রদানের উদ্যোগ নেবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে ইরাকি নিয়োগকর্তার চাহিদাপত্র বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক যাচাই ও সত্যায়নের পরই কর্মী পাঠানো হবে। এছাড়া, কর্মীদের ইরাকে যাওয়ার আগে নিয়োগপত্র ও কর্মসংস্থান চুক্তি স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে অভিবাসন প্রক্রিয়া হয় স্বচ্ছ ও নিরাপদ।

ইরাকে কোন কোন খাতে কর্মীর চাহিদা রয়েছে, তা নির্ধারণে বাংলাদেশ দূতাবাস তথ্য সংগ্রহ করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি ইরাকে কর্মরত অনিয়মিত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে ইরাকি প্রতিনিধি দল ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সাধারণ ক্ষমার আবেদন জানিয়ে ইরাক সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পাঠাবে।

দুই দেশের মধ্যে শ্রমবাজার সহযোগিতা আরো জোরদার করতে যৌথ কমিটি প্রতি বছর অন্তত একবার বৈঠকে বসবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সমঝোতা চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমাদুল হক এবং ইরাকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন দেশটির মিডিয়া, আরব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মহাপরিচালক কাজিম আব্দুর রেজা খাইয়ুন আত-ওয়ানি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।

বৈঠকের আগে ইরাকি প্রতিনিধি দল প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এই উদ্যোগের ফলে ইরাকে বাংলাদেশি কর্মী প্রেরণের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।