Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে মুক্ত বন্দিদের ঘরে ফেরা, ফিলিস্তিনে উচ্ছ্বাস

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৯

যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে মুক্ত বন্দিদের ঘরে ফেরা, ফিলিস্তিনে উচ্ছ্বাস

২০২৫ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিরা যখন ঘরে ফিরতে শুরু করেন, তখন পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে আনন্দের জোয়ার বইতে থাকে। বহুদিন পর পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের এই মুহূর্তগুলো হয়ে ওঠে আবেগঘন ও প্রতীকী।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দিদের মুক্তির পর তাদের স্বাগত জানাতে রাস্তায় জড়ো হন শত শত মানুষ। কেউ ফুল ছিটিয়ে, কেউ জাতীয় পতাকা হাতে, আবার কেউ গান ও স্লোগানে বন্দিদের বরণ করে নেন। অনেকের চোখে ছিল অশ্রু, মুখে হাসি, যেন দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটেছে।

মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন কিশোর, তরুণ ও বৃদ্ধ; যাদের মধ্যে কেউ কেউ কয়েক বছর ধরে বন্দি ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল পাথর ছোড়া, বিক্ষোভে অংশগ্রহণ বা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত থাকার। তবে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো বলছে, এসব বন্দি আসলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

এই মুক্তি এসেছে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির চুক্তির মাধ্যমে, যার আওতায় হামাস কিছু ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ইসরায়েল পাল্টা হিসেবে শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে। এই বিনিময় প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত হয়েছে, বিশেষ করে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে।

মুক্ত বন্দিদের একজন বলেন, “আমি আমার মাকে ছুঁয়ে দেখতে পারছি, এটা যেন স্বপ্ন। আমি শুধু শান্তি চাই।” আরেকজন জানান, “আমার ছোট ভাইকে শেষবার দেখেছিলাম যখন সে শিশু ছিল, এখন সে স্কুলে যায়।”

এই পুনর্মিলন শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিস্তিনি নেতারা এই মুক্তিকে ‘প্রতিরোধের বিজয়’ হিসেবে দেখছেন, আর সাধারণ মানুষ এটিকে আশার আলো হিসেবে গ্রহণ করছেন।

তবে এই আনন্দের মাঝেও রয়েছে উদ্বেগ। অনেক পরিবার বলছে, তাদের আরো আত্মীয় এখনো বন্দি রয়েছেন, যাদের মুক্তির কোনো নিশ্চয়তা নেই। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েলের কারাগারে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই বিচার ছাড়াই আটক।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন বিনিময় নয়, বরং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।

ফিলিস্তিনে বন্দিদের ঘরে ফেরা শুধু একটি রাজনৈতিক চুক্তির ফল নয়, বরং এটি মানুষের আশা, ভালোবাসা ও প্রতিরোধের প্রতীক। এই মুহূর্তগুলো প্রমাণ করে, যুদ্ধের মাঝেও মানবতা বেঁচে থাকে। আর শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দরকার সংলাপ, সহানুভূতি ও সাহস।

Logo