মধ্যপ্রাচ্যের নিউজ আপডেট ১৩ অক্টোবর ২০২৫
অবৈধ যাত্রী পরিবহনের দায়ে সৌদিতে ৬০৬ জন আটক
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:২০
সৌদি আরব
অবৈধ যাত্রী পরিবহনের দায়ে সৌদিতে ৬০৬ জন আটক
সৌদি আরবে ব্যক্তিগত গাড়িতে অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহনের অভিযোগে শুরু হয়েছে ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান। দেশটির ট্রান্সপোর্ট অথরিটি গত ৪ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ৬০৬ জনকে আটক করেছে। সৌদি গেজেট এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, আটককৃতদের মধ্যে ৩৬২ জন অনুমোদন ছাড়াই গাড়িতে যাত্রী তুলছিল এবং ২৪৪ জন ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহন করছিল।
কর্তৃপক্ষ জানায়, এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো পরিবহন খাতকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও প্রতিযোগিতামূলক করা এবং অনুমোদনহীন কার্যক্রম বন্ধ করা। এমন এক সময় সৌদিতে এই অভিযানের খবর এলো, যখন ওমানে এমনি অনিরাপদ যাত্রী পরিবহনের কারণে ৮ বাংলাদেশি মারা গেছেন।
সৌদির নতুন পরিবহন আইন অনুযায়ী, অবৈধ যাত্রী পরিবহনে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা ও ৬০ দিন পর্যন্ত গাড়ি জব্দের শাস্তি হতে পারে। এছাড়া বারবার আইন ভঙ্গ করলে গাড়ি নিলামে বিক্রি এবং বিদেশি অপরাধীদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার বিধানও রয়েছে।
সৌদি ট্রান্সপোর্ট অথরিটি জানিয়েছে, জননিরাপত্তায় অবৈধ পরিবহন বন্ধে এমন অভিযান চালু থাকবে।
ওমান
ওমানে ২১ বছরের নিচে গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া যাবে না
ওমানে নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী, এখন থেকে ২১ বছরের নিচে গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া নিষিদ্ধ করেছে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। গালফ নিউজ এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, নতুন নিয়মে আরো রয়েছে, গৃহকর্মীদের দৈনিক কাজের সময় ১২ ঘণ্টার বেশি হবে না এবং তাদের অন্তত ৮ ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে একদিন পূর্ণ বিশ্রাম বা বিকল্প হিসেবে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বছরে ২১ দিন বেতনসহ ছুটি ও ৩০ দিনের চিকিৎসাজনিত ছুটি দেওয়ার বিষয়টিও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনো নিয়োগকর্তা গৃহকর্মীর পাসপোর্ট বা ব্যক্তিগত কাগজপত্র আটক রাখতে পারবেন না এবং নিয়োগ সংক্রান্ত খরচ কর্মীর ওপর চাপানো যাবে না। চাকরির চুক্তি অবশ্যই অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে এবং কর্মীদের প্রতি যে কোনো রকম শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ওমানের শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সংস্কার শ্রমবাজারকে আরো ন্যায্য ও মানবিক করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, যাতে গৃহকর্মীরা সম্মানজনক পরিবেশে কাজ করতে পারেন এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলো সুরক্ষিত থাকে।
কুয়েত
কুয়েতে যত্রতত্র ময়লা ফেলার দায়ে জেল-জরিমানা শুরু
কুয়েতে পরিবেশ দূষণ ও যত্রতত্র ময়লা ফেলা বন্ধ করতে শুরু হয়েছে জেল, জরিমানা ও বহিষ্কার। আরব টাইমস এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাসে পরিবেশ রক্ষায় পুলিশ ৪ হাজার ৮৫৬টি পরিবেশ সংক্রান্ত অভিযোগ, মামলা ও মাঠ পরিদর্শন নথিভুক্ত করেছে, যার মধ্যে ২ হাজার ১৫১টি পরিবেশ অপরাধ, ১ হাজার ৩৩২টি মিসডিমিনর মামলা এবং ১ হাজার ৩৫টি মাঠ পরিদর্শন অন্তর্ভুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, যারা পাবলিক প্লেস, পর্যটন এরিয়া, মরুভূমি বা সমুদ্র এলাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ময়লা ফেলবেন, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বিদেশি নাগরিকদের জন্য গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে বহিষ্কারের ব্যবস্থা রয়েছে, আর কুয়েতি নাগরিকদের জন্য জরিমানা বা জেল হতে পারে।
পুলিশের সমন্বয়ে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী বিভিন্ন পর্যটন ও বিনোদন এলাকা, মরুভূমি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৪ ঘণ্টা প্যাট্রোল চালাচ্ছে।
এছাড়া মরুভূমিতে অগ্নিকাণ্ড এবং অবৈধভাবে আগুন জ্বালানো রোধ করতে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কুয়েত সরকার পরিবেশ সুরক্ষা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে চলেছে।
আরব আমিরাত
আবুধাবি সুখী নগরের তালিকায় শীর্ষে
২০২৫ সালের টাইম আউট ইনডেক্স অনুযায়ী, আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবি বিশ্বের সবচেয়ে সুখী শহরের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। গালফ নিউজ এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, আবুধাবির বাসিন্দারা তাদের শহরের পরিবেশ, নাগরিক সেবা এবং সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে, ২০২৪ সালের কোয়ালিটি অব লাইফ জরিপে দেখা গেছে, আবুধাবির ৯৩.৬% বাসিন্দা রাতেও একা হাঁটার সময় নিরাপদ বোধ করেন, যা শহরের নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ দেয়।
টাইম আউট ইনডেক্সের এই তালিকা শহরবাসীর জীবনমান, নিরাপত্তা, সামাজিক সংহতি ও দৈনন্দিন জীবনের নানা কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। তালিকায় দুবাইও উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করেছে এবং বিশ্বের ২০টি সুখী শহরের মধ্যে ১৬তম অবস্থানে রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই দুই শহরের সাফল্য শুধু দেশবাসীর জন্যই নয়, বরং বিশ্বের অন্যান্য শহরের জন্যও একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এছাড়া এই সূচক থেকে বোঝা যায়, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, সামাজিক সংহতি, নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের জীবনমানের মানও একটি শহরের সুখের মূল ভিত্তি। আবুধাবি ও দুবাইয়ের এই অর্জন দেশটির আন্তর্জাতিক ইমেজকে আরো শক্তিশালী করেছে, যার ফলে পর্যটক, ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক বাসিন্দারা আরো বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
logo-1-1740906910.png)