আরব নিউজ সম্পাদকের কলাম
“গাজায় যা ঘটেছে, তা যেন আর কখনো না ঘটে”
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৬
গাজা উপত্যকায় সাম্প্রতিক মানবিক বিপর্যয় মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এক গভীর ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে। হাজার হাজার প্রাণহানি, ধ্বংস, দুর্ভিক্ষ এবং জাতিসংঘের ভাষায় ‘গণহত্যা’- এই বাস্তবতা আমাদের বাধ্য করছে নতুন করে ভাবতে। আর সেই ভাবনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে গঠিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর শান্তি উদ্যোগ।
দুই বছর ধরে ব্যর্থ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর এই উদ্যোগকে কেবল আরেকটি ‘ফ্যান্সি নামের’ পরিকল্পনা বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এটি একটি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু বাস্তবসম্মত প্রচেষ্টা। ট্রাম্প নিজে এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা কেবল প্রতীকী নয়; বরং সব পক্ষের ওপর বাস্তব চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জন্য এটি একটি রাজনৈতিক ‘পথ নামা’র সুযোগ, আবার কেউ কেউ এটিকে হামাসকে পুরস্কৃত করার মতো বলেও মনে করছেন।
ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এই উদ্যোগকে ঘিরে রয়েছে হতাশা ও অবিশ্বাস। এত প্রাণহানি, এত ক্ষয়ক্ষতির পর এই প্রচেষ্টা অনেকের কাছে ‘বিলম্বিত ন্যায়বিচার’ বলে মনে হচ্ছে। অন্যদিকে হামাস এই উদ্যোগকে নিজেদের ‘অবিচলতা’র বিজয় হিসেবে দেখাতে চাইছে, যদিও এর পেছনে রয়েছে বিপুল মানবিক ক্ষয়ক্ষতি।
তবুও “ত্রুটিপূর্ণ হলেও একটি পরিকল্পনা থাকা, কোনো পরিকল্পনা না থাকার চেয়ে অনেক ভালো”। এই প্রচেষ্টা, “সবাইকে খুশি করার চেষ্টা নিজেই ব্যর্থতার রেসিপি”।
এই উদ্যোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো- এটি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের দরজা খুলে দিতে পারে। “এই সমাধানের কথা এখনই বলতে হবে না যে ‘সঠিক সময়’ আসার অপেক্ষায়, বরং এখনই”।
আরব ও মুসলিম দেশগুলো এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছে, যা নৈতিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে যুদ্ধ শেষ হয়নি, কষ্ট শেষ হয়নি, শান্তিও অর্জিত হয়নি। তাই মানবিক সহায়তা, খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয় নিশ্চিত করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত এই শান্তি প্রচেষ্টা নিখুঁত না হলেও এটি একটি শুরু। আর যেখানে শুরুই বিরল, সেখানে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত। এখন দেখার বিষয় ইসরায়েল ও হামাস এই সুযোগকে কাজে লাগাবে, নাকি অতীতের মতো আবারো হারিয়ে ফেলবে।
লেখক: ফয়সাল জে. আব্বাস, এডিটর ইন চিফ, আরব নিউজ
logo-1-1740906910.png)