Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান অনিশ্চয়তায়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৮

মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান অনিশ্চয়তায়

বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক পাঠানোর প্রধান গন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। এর মধ্যে সৌদি আরবে প্রায় ৩৫ লাখ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১২ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই অঞ্চলে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আমিরাত প্রায় এক বছর ধরে কার্যত ভিসা বন্ধ রেখেছে, আর সৌদি আরবের ভিসা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস. এম. মাহবুবুল আলম জানান, আমিরাতের ভিসা বন্ধ স্থায়ী নয়, অস্থায়ী। তবে কবে তা চালু হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, আমিরাত ও সৌদি জনশক্তি বাছাইয়ে এখন দক্ষতা ও প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে; বিশেষ করে চিকিৎসক, নার্স ও প্রকৌশলীদের।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে আমিরাতে গিয়েছিলেন ১ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ জন, ২০২৩ সালে ৯৮ হাজার ৪২২ জন, আর ২০২৪ সালে মাত্র ৪৭ হাজার ১৬৬ জন। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গেছেন মাত্র ২ হাজার ৯৯৩ জন। কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরোপে অবৈধ অভিবাসনের প্রবণতা, ভুয়া নথি এবং আমিরাতের জেলখানায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশটি ভিসা বন্ধ রেখেছে।

অন্যদিকে, সৌদি আরবে এখনো ভিসা চালু থাকলেও তা টিমটিম করে জ্বলছে বলে মন্তব্য করেছেন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি জানান, ওমরাহ ভিসায় গিয়ে অনেক বাংলাদেশি ফিরে আসেন না, কেউ ভিক্ষা করেন, কেউ ট্যাক্সি চালান, যা সৌদির কাছে নেতিবাচক বার্তা পাঠায়।

বিএমইটির তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সৌদি আরবে গেছেন ৩ লাখ ৪ জন। আগের বছর গিয়েছিলেন ৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৪ জন। তবে কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, এই ভিসাও যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলোতেও বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান কমেছে। যেমন, চলতি বছর কুয়েতে গেছেন ১১ হাজার, কাতারে ৪০ হাজার, লেবাননে ২ হাজার, জর্ডানে ৪ হাজার, ওমানে মাত্র ৪৩ জন। বাহরাইনে ২০১৭ সালের পর কার্যত ভিসা বন্ধ। কারণ, সে বছর এক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, “বিদেশে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম না মানলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় এবং দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই প্রবণতা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের সুযোগ আরো সংকুচিত হবে।”

বিএমইটির মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর জানান, সৌদি আরবে নিয়মিত জনশক্তি যাচ্ছে, তবে আমিরাত কেবল একটি নির্দিষ্ট কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে। অন্য দেশগুলোতে গ্রুপ বা অ্যাটেস্টেড ভিসার মাধ্যমে কিছু কর্মী যাচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে হলে দক্ষতা, নথির স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে কর্মসংস্থানের দরজা আরো সংকুচিত হতে পারে।

তথ্যসূত্র: বাংলা স্ট্রিম

Logo