
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থানের ভাড়া সংক্রান্ত নিয়মে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছেন দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। নতুন এক ডিক্রিতে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছর রিয়াদে কোনো বাড়ি বা দোকানের ভাড়া বাড়ানো যাবে না। এই সিদ্ধান্ত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট।
এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের লক্ষ্য ভাড়াটিয়া ও মালিকের মধ্যে সমতা নিশ্চিত করা এবং ভাড়ার বাজারে স্থিতিশীলতা আনা।
নতুন আইনের মূল দিকগুলো:
১. ভাড়া বৃদ্ধি নিষিদ্ধ: রিয়াদের শহুরে এলাকায় পুরোনো বা নতুন যে কোনো ভাড়া চুক্তির ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছর ভাড়া বাড়ানো যাবে না। অন্য শহর বা প্রদেশে এই নিয়ম প্রয়োগ করতে হলে রিয়েল এস্টেট জেনারেল অথরিটি ও ইকোনমিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের অনুমোদন লাগবে।
২. খালি ও নতুন সম্পত্তির ভাড়া: যেসব বাড়ি বা দোকান বর্তমানে খালি, সেগুলোর ভাড়া শেষ চুক্তির ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। যেসব ইউনিট আগে কখনো ভাড়া দেওয়া হয়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া আলোচনার মাধ্যমে শুরুর ভাড়া ঠিক করতে পারবেন।
৩. চুক্তির বাধ্যতামূলক নিবন্ধন ও নবায়ন: সব ভাড়া চুক্তি ‘ইজার প্ল্যাটফর্মে’ নিবন্ধন করতে হবে, যেটি বাড়িওয়ালা বা ভাড়াটিয়া উভয়েই করতে পারবেন। চুক্তিতে ভুল থাকলে ৬০ দিনের মধ্যে আপত্তি জানানো যাবে। আপত্তি না থাকলে চুক্তিকে বৈধ ধরা হবে। রিয়াদে ভাড়াটিয়া চাইলে বাড়িওয়ালাকে চুক্তি নবায়ন করতে বাধ্য থাকতে হবে।
৪. নবায়ন বাতিলের শর্ত: বাড়িওয়ালা কেবল কয়েকটি নির্দিষ্ট কারণে চুক্তি নবায়ন না করার সুযোগ পাবেন। যেমন- ভাড়াটিয়া সময়মতো ভাড়া না দিলে, বাড়ির কাঠামোগত বড় ত্রুটি থাকলে অথবা বাড়িওয়ালা নিজে বা তার নিকটাত্মীয় সেই সম্পত্তি ব্যবহার করতে চাইলে।
তবে বাড়িওয়ালারা নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে ভাড়া বাড়ানোর আবেদন করতে পারবেন। যেমন- যদি সম্পত্তিতে বড় ধরনের সংস্কার করা হয় অথবা শেষ চুক্তিটি ২০২৪ সালের আগে হয়ে থাকে।
এই সিদ্ধান্ত সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসীদের জন্য বড় স্বস্তির খবর, বিশেষ করে যারা রিয়াদে কাজ বা ব্যবসার জন্য বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ ভাড়ার বাজারে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা আনবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সৌদি আরবের আবাসন খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তথ্যসূত্র: সৌদি গেজেট