গাজায় দুর্ভিক্ষ: জাতিসংঘের প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১০:০১

প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের একটি সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্ল্যাসিফিকেশন (IPC) জানিয়েছে, গাজা শহর ও আশপাশের অঞ্চল চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে, যেখানে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর মুখোমুখি।
IPC জানিয়েছে, গাজার দুর্ভিক্ষ “সম্পূর্ণরূপে মানুষের তৈরি” এবং তা প্রতিহত করা সম্ভব। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসেও বিপর্যয়কর পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল IPC-এর প্রতিবেদনকে “মিথ্যা ও পক্ষপাতদুষ্ট” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের সামরিক সংস্থা কোগ্যাট দাবি করেছে, এই মূল্যায়ন হামাসের দেওয়া অসম্পূর্ণ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং গাজায় চলমান মানবিক প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করেছে।
IPC-এর ৫৯ পৃষ্ঠার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গাজা বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার পঞ্চম পর্যায়ে রয়েছে, যার অর্থ হলো মৌলিক চাহিদার চরম অভাব, ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি। কমিটি জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরো তীব্র হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে এবং সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষগুলো মারা যেতে শুরু করেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “গাজার জীবন্ত নরক বর্ণনার জন্য যখন আর কোনো শব্দ অবশিষ্ট নেই, তখনই একটি নতুন শব্দ যোগ হয়েছে- দুর্ভিক্ষ।” তিনি এটিকে “মানবতার ব্যর্থতা” বলে অভিহিত করেছেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও পূর্ণ মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের চার সংস্থা- FAO, UNICEF, WFP ও WHO যৌথ বিবৃতিতে গাজায় নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছে, “যে কোনো মূল্যে দুর্ভিক্ষ বন্ধ করতে হবে।” জুলাই মাসে ১২ হাজারেরও বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে বলে শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে চারজনের একজন মারাত্মক ঝুঁকিতে।
IPC বলেছে, এখনই সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ না নিলে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর হার অগ্রহণযোগ্যভাবে বাড়বে। যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা