
ওমানের দক্ষিণ আল বাতিনাহ প্রদেশের নাখাল উইলায়েতের ওয়াদি মিস্তাল অঞ্চলে অবস্থিত ওয়াকান গ্রাম এখন দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় ইকো-ট্যুরিজম গন্তব্য। ১,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই পাহাড়ি গ্রামটি তার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্যবাহী কৃষি ব্যবস্থা এবং মৌসুমি ফলের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
পর্যটন প্রবাহে উল্লম্ফন ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ওয়াকান গ্রামে পর্যটক সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ৪২৮ জন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩% বেশি। এই বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে গ্রামটির অনন্য আবহাওয়া, ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং ফলের মৌসুমে সৃষ্ট রঙিন পরিবেশ।
ফলের মৌসুমে রঙিন গ্রাম ওয়াকানের ফলের মৌসুম শুরু হয় জুনে এপ্রিকট দিয়ে, এরপর আসে পিচ, ফিগ, ডালিম এবং আগস্টে স্থানীয় আঙ্গুরের জাত- আল-মাকদমানি, আল-মালাসি ও টক জাতের আঙ্গুর। এই ফলগুলো উৎপন্ন হয় শতাব্দী প্রাচীন ‘ফালাজ’ পানি সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে, যা গ্রামটির কৃষি ঐতিহ্যের অংশ।
হাইকিং ও সংস্কৃতির ছোঁয়া গ্রামটির আকর্ষণীয় হাইকিং ট্রেইল, প্রাচীন কৃষি টেরেস, শতাব্দী পুরনো মসজিদ ও ঐতিহাসিক পাড়া পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এখানকার আবহাওয়া গ্রীষ্মে ঠান্ডা ও শীতকালে শীতল, যা ওমানের উষ্ণ মরুভূমি জলবায়ুর বিপরীত।
টেকসই পর্যটনের মডেল ওয়াকান গ্রামকে এখন টেকসই পর্যটনের মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই পর্যটন ব্যবস্থা প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাস অনুরাগীদের জন্য আদর্শ গন্তব্য।
ওয়াকান শুধু একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি একটি জীবন্ত সম্প্রদায়, যেখানে ফলের মৌসুম শুধু সৌন্দর্য নয়, জীবিকার উৎসও। পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন ফল বা ফুল না ছিঁড়ে, বরং স্থানীয়দের কাছ থেকে তা কিনে নেন।
এই পাহাড়ি গ্রামটি যেন প্রকৃতি ও সংস্কৃতির এক অপূর্ব মিলনস্থল, যেখানে প্রতিটি মৌসুমে নতুন রূপে ধরা দেয় সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া