
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ এশিয়ার চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। তবে ২০২৫ সালে দেশটি ভিসা ও কর্মসংস্থান নীতিমালায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে, যা ভিজিট ভিসায় চাকরি খোঁজা বা কাজ করার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই নিবন্ধে ইউএইর নতুন নিয়মাবলি, আইনি দিক, জরিমানা এবং চাকরির ভিসায় রূপান্তরের প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।
ভিজিট ভিসায় চাকরি: আইনত নিষিদ্ধ
ইউএইর ফেডারেল ডিক্রি আইন নং ৩৩ (২০২১) অনুযায়ী, ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কোনো ব্যক্তি কাজ করতে পারবেন না। একই সঙ্গে ফেডারেল ডিক্রি আইন নং ২৯ (২০২১) অনুসারে, বিদেশি নাগরিকদের বৈধ অনুমতি ছাড়া কর্মে নিযুক্ত হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
আইন লঙ্ঘনের শাস্তি:
কর্মী: সর্বোচ্চ ৫০,০০০ দিরহাম জরিমানা ও নির্বাসন
নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান: ১ লাখ থেকে ১০ লাখ দিরহাম পর্যন্ত জরিমানা ও ব্ল্যাকলিস্টিং
চাকরির অফার পেলে করণীয়:
- যদি কেউ ইউএইতে চাকরির অফার পান, তাহলে তাকে অবশ্যই নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
- ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন: নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান MoHRE–এর মাধ্যমে আবেদন করবে।
- রেসিডেন্সি ভিসায় রূপান্তর: ভিজিট ভিসা থেকে রেসিডেন্সি ভিসায় পরিবর্তন করতে হবে।
- চাকরি শুরুর আগে অনুমোদন: অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করা যাবে না।
ভিসা পরিবর্তনের সুবিধা (২০২৫)
২০২৫ সালের নিয়ম অনুযায়ী, দেশ ছাড়ার প্রয়োজন নেই, ইউএইর অভ্যন্তরেই ভিসা স্ট্যাটাস পরিবর্তন সম্ভব।
চাকরির ধরন অনুযায়ী পারমিটের ধরন:
- ফুল-টাইম
- পার্ট-টাইম
- ফ্রিল্যান্স
- টেম্পোরারি
নতুন ভিসা সুবিধা ও সংস্কার:
- জব সিকার ভিসা: ৬০, ৯০ বা ১২০ দিনের জন্য স্পন্সর ছাড়া চাকরি খোঁজার অনুমতি।
- গ্রিন ভিসা: ফ্রিল্যান্সার, বিনিয়োগকারী ও দক্ষ কর্মীদের জন্য ৫ বছরের রেসিডেন্সি ভিসা।
- রিমোট ওয়ার্ক ভিসা: বিদেশি কোম্পানির জন্য কাজ করে ইউএইতে বসবাসের সুযোগ।
- গোল্ডেন ভিসা: দীর্ঘমেয়াদি রেসিডেন্সি (৫–১০ বছর) বিনিয়োগকারী, বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদদের জন্য।
ইউএইর নতুন কর্মসংস্থান নীতিমালা চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য যেমন সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তেমনি আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে। ভিজিট ভিসায় চাকরি খোঁজার আগে আইনি দিক ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্যসূত্র: খালিজ টাইমস