
সৌদি আরবে তাকে বলা হতো ‘ঘুমন্ত রাজকুমার’। নাম তার প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল আল সৌদ। গত ২০ বছর ছিলেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় কোমা। শেষমেশ পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে সেই ঘুমন্ত যুবরাজের জীবনাবসান হলো সৌদির এক হাসপাতালে।
কে এই ঘুমন্ত রাজকুমার?
১৯৯০ সালের এপ্রিলে জন্মগ্রহণকারী প্রিন্স আল ওয়ালিদ ছিলেন সৌদি রাজপরিবারের একজন বিশিষ্ট সদস্য এবং ধনকুবের প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালালের ভাগ্নে প্রিন্স খালেদ বিন তালাল আল সৌদের জ্যেষ্ঠ পুত্র।
কেন ছিলেন কোমায়?
প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল আল সৌদ লন্ডনে সামরিক ক্যাডেট হিসেবে লন্ডন গিয়েছিলেন। সময়টা ২০০৫। সে বছর এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হন। গুরুতর আঘাত পান মস্তিষ্কে। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের শিকার হন তিনি।
জরুরি চিকিৎসা সেবা এবং বিশেষায়িত আমেরিকান ও স্প্যানিশ চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ সত্ত্বেও তিনি কখনো পূর্ণ জ্ঞান ফিরে পাননি। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রিন্স আল ওয়ালিদ মূলত অপ্রতিক্রিয়াশীল কোমায় ছিলেন। যদিও মাঝে মাঝে অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়া আশার আলো দেখা দিত। তার বাবা প্রিন্স খালেদ ঐশ্বরিক নিরাময়ে দৃঢ় বিশ্বাস রেখে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার পরামর্শ প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করে আসছিলেন।
পরিবারটি এমন ভিডিও শেয়ার করত, যেখানে যুবরাজকে কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি সামান্য সাড়া দিতে দেখা যাচ্ছে, যা জনসাধারণের সহানুভূতি এবং প্রশংসাকে মোহিত করেছে।
জাতীয় শোক এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা
সৌদি আরবের একটি বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্রে যুবরাজের মৃত্যুর খবর দেশটির জনসাধারণ ও বাসিন্দাদের মনে শোকের ছায়া ফেলেছে। অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
"স্লিপিং প্রিন্স" হ্যাশট্যাগটি সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে ট্রেন্ডিং করেছে, যখন হাজার হাজার মানুষ ধৈর্য, বিশ্বাস এবং পিতৃত্বের ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে শোক প্রকাশ করেছে।
‘ঘুমন্ত রাজকুমারের’ চিকিৎসা, আর তার পাশে বছরের পর বছর একজন নিবেদিতপ্রাণ পিতার অপেক্ষার চিত্র দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন।
সূত্র: গালফ নিউজ