Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

কেন ইরানে পড়ছে এত ভারতীয় শিক্ষার্থী?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ০৮:১৯

কেন ইরানে পড়ছে এত ভারতীয় শিক্ষার্থী?

চলমান ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে ইরানে অবস্থানরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও একটি প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে- কেন এত ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়তে যাচ্ছেন ইরানে? পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় তুলনামূলক কম আলোচিত হলেও ইরান এখন ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চশিক্ষার এক আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে চিকিৎসাশাস্ত্রের ক্ষেত্রে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালেই ইরানে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন প্রায় ২,০৫০ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার জনে। তাদের বেশির ভাগই ভর্তি হয়েছেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইরানে সরাসরি MBBS ডিগ্রি না থাকলেও Doctor of Medicine (MD) ডিগ্রি প্রদান করা হয়, যা ভারতের জাতীয় চিকিৎসা কমিশন (NMC) কর্তৃক স্বীকৃত এবং MBBS-এর সমতুল্য হিসেবে গণ্য হয়। এই ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীরা FMGE বা NEXT পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভারতে চিকিৎসা করার যোগ্যতা পান।

ভারতে NEET পরীক্ষায় প্রবল প্রতিযোগিতা এবং সরকারি মেডিকেল কলেজে সীমিত আসনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে বিকল্প খুঁজছেন। প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে যেখানে ৮০-৯০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়, সেখানে ইরানে একই ধরনের কোর্সে খরচ হয় গড়ে ১৮-২৫ লাখ টাকার মধ্যে, যার মধ্যে হোস্টেল ও অন্যান্য খরচও অন্তর্ভুক্ত। এই আর্থিক সুবিধাই ইরানকে করে তুলেছে মধ্যবিত্ত ভারতীয় পরিবারের জন্য একটি বাস্তবসম্মত বিকল্প।

ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক ল্যাব, হাসপাতাল এবং ক্লিনিক্যাল ট্রেনিংয়ের সুযোগ থাকায় শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা। এছাড়া ইরান সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ ও সহজ ভিসা প্রক্রিয়া চালু করেছে, যা আরো উৎসাহ জুগিয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে উর্মিয়া মেডিকেল ইউনিভার্সিটি থেকে শতাধিক ভারতীয় শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভারত সরকার “অপারেশন সিন্ধু” নামে একটি বিশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে।

সব মিলিয়ে ইরানে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিড় শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং এক ধরনের কৌশলগত সিদ্ধান্তও। তবে বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এই সিদ্ধান্তকে কতটা টেকসই রাখবে, তা সময়ই বলে দেবে।

মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট

Logo