ইসরায়েলি হামলা তীব্রতর হওয়ার ফলে চরম সংকটে পড়েছেন ইরানে আশ্রয় নেওয়া আফগান শরণার্থীরা৷ ইরানে কোথাও তারা নিরাপদ স্থান খুঁজে পাচ্ছেন না, বাড়ি ফেরারও কোনো উপায় নেই৷

নিরাপত্তার খোঁজে ইরানে পালিয়ে আসা এই লাখ লাখ আফগান নতুন অনিশ্চয়তা এবং চাপের মুখে পড়েছেন৷ আফগান শরণার্থী রাহেলা রাসা বলেন, ‘‘আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই৷ আমাদের চলাচলের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ আমাদের হয়রানি, অপমান এবং নির্যাতন করা হচ্ছে৷’’

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের দেওয়া তথ্যমতে, ইরানে প্রায় ৪৫ লাখ আফগান বাস করেন৷ তবে অন্যান্য নানা সূত্র বলছে, এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান হাজার হাজার আফগানকে দেশ থেকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তবে, তালেবান শাসন থেকে পালিয়ে কর্মসংস্থান বা আশ্রয়ের জন্য নিয়মিতই ইরানে আসছেন আফগানরা৷

ইরানে বসবাসকারী আফগানদের জন্যও পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে৷ শরণার্থীরা কেবল উচ্চমূল্যে খাবার কিনতে পারছেন এবং তাদের তেহরান ছেড়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে৷

তালেবান শাসনামলে নির্যাতনের আশঙ্কায় থাকা বেশির ভাগ আফগান শরণার্থীর জন্য আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়া কোনো বিকল্প নয়৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সাবেক সদস্য বলেছেন, তিনি ক্রমাগত ভয়ের মধ্যেই বাস করছেন৷

তালেবান-পূর্ববর্তী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইরানে দেশটির সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ওমর দাউদজাই বলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে অনেকেই আফগানিস্তানে ফিরে যেতে বাধ্য হতে পারেন বলে শঙ্কা তার৷ মানব পাচারকারী চক্রগুলো সংঘাতে অনিশ্চয়তার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে৷ ইরানে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে তুরস্ক সীমান্ত খুলে দিয়েছে৷

কিন্তু অভিবাসী অধিকার কর্মী আলী রেজা কারিমি সীমান্ত খুলে দেওয়ার এমন দাবিকে পাচারকারীদের ছড়িয়ে দেওয়া মিথ্যা তথ্য বলে উল্লেখ করেছেন৷ তিনি জানিয়েছেন, এখন বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং তুরস্কের সীমান্ত কেবল বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসাধারী ইরানি নাগরিক এবং ভ্রমণকারীদের জন্য খোলা রয়েছে৷ আফগান অভিবাসীদের জন্য এই সীমান্ত বন্ধ বলেও জানান তিনি৷

আফগান শরণার্থীরা যাতে পাচারকারীদের মিথ্যাচারের ফাঁদে না পড়েন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কারিমি৷

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে