
পরিবেশবাদী ও মানবাধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ১০ জুন রাতে সুইডেনে ফিরেছেন। ইসরায়েল তাকে ও অন্য কর্মীদের গাজার উদ্দেশে যাওয়া একটি ত্রাণবাহী জাহাজ থেকে আটক করে। পরে কিছু কর্মীকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠায়।
তেল আবিব থেকে এএফপি জানায়, গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’-এ ছিল ১২ জন কর্মী। তাদের মধ্যে থুনবার্গসহ চারজনকে জোর করে ইসরায়েল থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাকিদেরও জোর করা হলে তারা তা অস্বীকার করেন। তবে সবাইকে ১০০ বছরের জন্য ইসরায়েলে প্রবেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের পক্ষে আইনি লড়াই করা অধিকার সংস্থা ‘আদালাহ’ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আদালাহ আরো জানায়, স্বেচ্ছায় ইসরায়েল ছাড়তে অস্বীকার করায় বাকি আটজনকে আটক করে মঙ্গলবার আদালতে তোলা হয়।
ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ পরিচালিত জাহাজটি আটক করে। পরে সেটিকে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আটককৃতদের তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে থুনবার্গ প্রথমে ফ্রান্স, পরে সুইডেন ফিরে যান।
প্যারিসের ‘চার্লস দ্য গল’ বিমানবন্দরে ২২ বছর বয়সী থুনবার্গ বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে অপহরণ করে জোর করে ইসরায়েলে নেওয়া হয়েছে। এটি ইসরায়েলের অসংখ্য অন্যায় কর্মকাণ্ডের মতো মানবাধিকারের আরো একটি চরম লঙ্ঘন।’
স্টকহোমে পৌঁছানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যা নিয়ে ভয় পাই, তা হলো গণহত্যার সময় মানুষের নীরবতা।’
এদিকে, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো জানান, জাহাজে থাকা ফরাসি চার কর্মীকে আদালতের মুখোমুখি করা হবে।
এর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্সে’ এক পোস্টে লিখেছিলেন, পাঁচজনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আদালতে মামলা হবে এবং মাত্র একজন স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ করতে পারবেন।
বারো সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফরাসি কূটনীতিকরা ইসরায়েলে থাকা ছয় ফরাসি নাগরিকের সঙ্গে দেখা করেছেন। এছাড়া স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়তে অস্বীকার করার মধ্যে রয়েছেন ফরাসি-ফিলিস্তিনি ইউরোপীয় এমপি রিমা হাসান।’
অন্য কর্মীরা ছিলেন ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রাজিল, তুরস্ক, সুইডেন, স্পেন ও নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া ও ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙা।
এদিকে ‘প্রতীকী কর্মসূচি’ হিসেবে শত শত মানুষ তিউনিসিয়া থেকে লিবিয়া হয়ে গাজা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার সব বাসিন্দাই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
তথ্যসূত্র: বাসস