২০২৬ সালে ইউরোপ, আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে সৌদির অর্থনীতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০৮:৫৩

OECD-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালে সৌদি আরবের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২.৫ শতাংশ, যা যুক্তরাষ্ট্র (১.৫%), যুক্তরাজ্য (১.০%) ও ফ্রান্স (০.৯%) এর চেয়ে বেশি। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে সৌদি সরকারের নন-অয়েল সেক্টরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও পর্যটন খাতে উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ সালে সৌদি আরবের অর্থনীতি ৩ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ৩.৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে। এই প্রবৃদ্ধি মূলত নন-অয়েল সেক্টরের উন্নয়ন এবং বৈচিত্র্যময় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে হবে।
নন-অয়েল খাতে প্রবৃদ্ধি ও শ্রমবাজারে পরিবর্তন
সৌদি আরবের নন-অয়েল খাতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসে, রিয়াদ ব্যাংকের পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (PMI) ৫৫.৮-এ পৌঁছেছে, যা অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়। এই প্রবৃদ্ধি মূলত নতুন অর্ডার বৃদ্ধি, গ্রাহক চাহিদা বৃদ্ধি, শিল্প উন্নয়ন এবং বিপণন প্রচেষ্টার ফলে হয়েছে।
শ্রমবাজারেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালের শেষে সৌদি আরবে বেকারত্বের হার ৭ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্যমাত্রা ছয় বছর আগেই অর্জিত হয়েছে। নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শ্রমবাজারে বৈচিত্র্য আনছে।
দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা ও প্রশিক্ষণ উদ্যোগ
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নির্মাণ, প্রযুক্তি, পর্যটন এবং সবুজ জ্বালানি খাতে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চাহিদা পূরণে সৌদি আরব সরকার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক স্কুলগুলো সৌদি আরবে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করছে। স্পেনের IESE এবং IE, লন্ডন বিজনেস স্কুল (LBS), এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাবসন কলেজ সৌদি আরবে অংশীদারিত্ব, অফিস এবং কাস্টম প্রোগ্রাম চালু করেছে। এই প্রোগ্রামগুলো ডিজিটাল রূপান্তর, কৌশল এবং টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।
উদাহরণস্বরূপ, লন্ডন বিজনেস স্কুল ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার সৌদি নির্বাহীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই উদ্যোগগুলো সৌদি আরবের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য এবং দক্ষ শ্রমশক্তি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সৌদি আরবের অর্থনীতি ২০২৬ সালে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এই প্রবৃদ্ধি নন-অয়েল খাতের উন্নয়ন, শ্রমবাজারের পরিবর্তন এবং দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে সম্ভব হবে। সরকারের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা উদ্যোগগুলো এই চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে এবং সৌদি আরবের অর্থনীতিকে আরো বৈচিত্র্যময় ও স্থিতিশীল করে তুলবে।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট