প্রবাসে অস্বাভাবিক মৃত্যু: ৩১% কর্মীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১২:০৪

বিদেশে কাজ করতে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করছেন। ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৫৫৪ জন মৃত প্রবাসী কর্মীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাদের গড় বয়স ছিল মাত্র ৩৭ বছর। এই মৃত্যুর মধ্যে ৩১ শতাংশই অস্বাভাবিক, যার মধ্যে ১৬ শতাংশ দুর্ঘটনাজনিত এবং ১৫ শতাংশ আত্মহত্যা। ২৮ শতাংশ স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও বাকিরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ এবং বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রামরু (RMMRU) যৌথভাবে এক সংলাপে এসব তথ্য তুলে ধরে জানায়, মৃতদের মৃত্যুসনদে যে কারণ লেখা থাকে, তা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা সন্তুষ্ট নন। অনেকেই মনে করেন, মৃত্যুতে রহস্য আছে এবং ময়নাতদন্ত ছাড়া প্রকৃত কারণ জানা যায় না।
সংলাপে জানানো হয়, গত ১২ বছরে মোট ৪০ হাজার ৭১৩ জন প্রবাসী কর্মীর মরদেহ দেশে ফিরেছে। ২০২৪ সালেই এসেছে ৪ হাজার ৮১৩ জনের লাশ। এদের মধ্যে অনেকের মৃত্যুতে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও, মৃত্যুসনদে এসবের উল্লেখ নেই।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, দেশে মরদেহ আসার পর ময়নাতদন্ত সম্ভব। তবে এতে প্রেরক দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া কী হবে, সেটাও বিবেচনা করতে হবে।
রামরুর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, মৃত্যুসনদ একেক দেশে একেক রকম হয়, যা বোঝা কঠিন। WHO-এর গাইডলাইন অনুসরণ করে অভিন্ন ফরম্যাট চালুর সুপারিশ করেন তিনি।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কামরুল হাসান বলেন, “এই অল্প বয়সে মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহজনক। প্রতিটি মরদেহের ময়নাতদন্ত হওয়া উচিত।” তিনি আরো বলেন, দূতাবাসকেও এসব বিষয়ে আরো সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
সংলাপে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ, এবং বিমানবন্দরে হিমাগার স্থাপনসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। নারী শ্রমিকদের যৌন নির্যাতন এবং পুরুষদের অতিরিক্ত কাজের চাপে আত্মহত্যার দিকটিও উঠে আসে আলোচনায়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিন রেমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
তথ্যসূত্র: রামরু