Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

কফিল কে, প্রবাসী শ্রমিকরা কেন কফিলের ওপর নির্ভরশীল?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ২০:১৯

কফিল কে, প্রবাসী শ্রমিকরা কেন কফিলের ওপর নির্ভরশীল?

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘কফিল’ শব্দটি ঘুরেফিরে আসছে বিভিন্ন পোস্ট, মিম আর ভিডিওতে। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এই কাফালা পদ্ধতি আর ‘কফিল’ শব্দটি।

‘কফিল’ কে?

‘কফিল’ হলো নিয়োগকর্তা বা যার অধীনে একজন কাজ করেন। একজন কফিল একজন শ্রমিকের শুধু নিয়োগকর্তা নন, ওই শ্রমিকের ভিসা, থাকার অনুমোদন বা রেসিডেন্স পারমিট থেকে শুরু করে সার্বিক বিষয়ে দেখভাল করেন। একজন কফিল ভালো না হলে একজন শ্রমিকের জীবন বিষিয়ে ওঠে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে কফিলের সাথে ঘনিষ্ঠ একদল লোক গড়ে উঠেছে, যারা মালিকের পক্ষে শ্রমিকদের ওপর শোষণ চালায়। এরা কলকারখানায় নতুন শ্রমিক এনে দেয়। মালিকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের জোরে এরা সাধারণ শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।

মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবস্থা

আমাদের আশপাশে অনেকেই আছেন, যাদের বাবা বা বড় ভাই কাজ করেন বিদেশে; বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে। তারা সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান বা বাহরাইনে যান জীবিকা খুঁজতে। তাদের পাঠানো টাকা দিয়ে পরিবার চলে, ভাই-বোনরা স্কুলে যায়, নতুন বাড়ি হয়। কিন্তু জানেন কি, সেই পরদেশে তাদের জীবন কতটা কঠিন? তারা অনেক সময় দিনে ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করেন। রোদে-গরমে ঘেমে ভিজে যান, কিন্তু বিশ্রামের সুযোগ খুব কম। অনেকে ভালো মালিক পেলেও অধিকাংশের ভাগ্যে জোটে ঠকানো, মারধর আর অবহেলা।

এই মানুষগুলো দেশের গর্ব হলেও বিদেশে তারা যেন নাম পরিচয়হীন একজন রোবট। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে রক্ত-ঘাম পানি করে রোবটের মতো বিরামহীন কাজ করে যান।

শ্রমিকরা কফিলদের ভয় পান, কারণ কফিল চাইলে চাকরি চলে যেতে পারে। কেউ প্রতিবাদ করলে হয়তো দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি আসে। এমনকি অসুস্থ শ্রমিক বা মৃতদেহ দেশে আসতে কফিলের অনুমতি লাগে।

মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করা অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকের জীবনে ‘কফিল’ বিভীষিকার মতো। মধ্যপ্রাচ্যের কফিল বা কাফালা পদ্ধতি নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। এই কাফালা বা কফিল পদ্ধতির সংস্কারের আলাপ চলছে গত কয়েক বছর ধরে।

বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার আগে এসব বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতা দরকার। বিদেশে যাওয়া মানেই উন্নতি, কিন্তু সেই উন্নতি হতে হবে শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসায়।

তথ্যসূত্র: কিশোর আলো 

Logo