
সৌদি আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত, বজ্রঝড় এবং আকস্মিক বন্যার আশঙ্কায় সাধারণ মানুষ ও হজযাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সৌদি আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই প্রতিকূল আবহাওয়া অন্তত ৩ মে পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
হজযাত্রীদের চলাচলে শঙ্কা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজ পালনের উদ্দেশে আগত হাজার হাজার মুসল্লি বর্তমানে মক্কা ও মদিনায় অবস্থান করছেন। অনেকেই হজের প্রাক-আচার যেমন ওমরাহ পালন ও জিয়ারতে অংশ নিচ্ছেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এসব কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশি হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা
মক্কায় অবস্থানরত এক বাংলাদেশি হজযাত্রী আব্দুল কাদের বলেন, “বুধবার সকাল থেকে মেঘলা আকাশ এবং দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে। অনেকেই বৃষ্টির কারণে হোটেল থেকে বের হতে পারছেন না। নিরাপত্তার কারণে প্রশাসনও বিভিন্ন স্থান বন্ধ রাখছে।”
আরেকজন যাত্রী, নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা রাশেদা বেগম জানান, “ওমরাহর জন্য হারামে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ আপাতত বাইরে যেতে নিষেধ করেছে। আগে কখনো এমন বৃষ্টির অভিজ্ঞতা হয়নি।”
হজ এজেন্সিগুলোর প্রস্তুতি
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি অনুমোদিত হজ এজেন্সি জানিয়েছে, তারা আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী তাদের পরিকল্পনা ও রুটিন সাময়িকভাবে পরিবর্তন করছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আবাসন হোটেলগুলোতে অতিরিক্ত গাইড ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করা হয়েছে।
ঢাকাভিত্তিক একটি হজ এজেন্সির প্রতিনিধি মুফতি রাশিদুল হক জানান, “আমরা নিয়মিত সৌদি কর্তৃপক্ষের বুলেটিন ফলো করছি এবং আমাদের হজযাত্রীদের পরিস্থিতি বুঝে বাইরে বের হওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি। প্রয়োজনে হোটেলে ওমরাহ ও হজ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে।”
সৌদি কর্তৃপক্ষের জরুরি ব্যবস্থা
সৌদি সিভিল ডিফেন্স এবং হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে-
- ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সেখানে অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে
- জরুরি রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে
- হজযাত্রীদের চলাচলের রুটে বাড়তি নজরদারি চলছে
- আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে রুট প্ল্যান পরিবর্তনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে
তাছাড়া, বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আবহাওয়াজনিত কারণে সম্ভাব্য ফ্লাইট বিলম্বের জন্য হজ এজেন্সি ও যাত্রীদের প্রস্তুত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।
সৌদি আরবে চলমান বৃষ্টিপাত ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হজ ব্যবস্থাপনায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের শান্ত ও সতর্ক থেকে হজ এজেন্সি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মাইগ্রেশন কনসার্ন