জার্মানির ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন রিসার্চের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটিতে বসবাসরত অভিবাসীদের মধ্যে জীবনমান নিয়ে সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ‘২০২৫ হ্যাপিনেস অ্যাটলাস’ অনুযায়ী, জার্মানিতে প্রতি দুই জনে একজন তাদের জীবন নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। পূর্ব জার্মানির মানুষের মধ্যে এই প্রবণতা পশ্চিমাঞ্চলের তুলনায় বেশি, আর শহর হিসেবে হামবুর্গকে সবচেয়ে সুখী বলা হয়েছে।
গবেষণায় অংশ নিয়েছেন ২০ থেকে ৫২ বছর বয়সী ৩০ হাজার বাসিন্দা। জার্মানির প্রায় ৮ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশই অভিবাসী বা অভিবাসীদের সন্তান। গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা অভিবাসীরা সবচেয়ে বেশি সন্তুষ্ট, এরপর রয়েছে অভিবাসী নয় এমন জনগোষ্ঠী এবং অভিবাসী পরিবারের প্রথম প্রজন্ম।
তবে আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে আসা অভিবাসীদের মধ্যে অসন্তুষ্টির হার বেশি। প্রতি তিনজনে একজন জানিয়েছেন, তারা জীবনমান নিয়ে সন্তুষ্ট নন। গবেষকদের মতে, বর্ণবাদ ও সামাজিক বৈষম্যের অভিজ্ঞতা এই অসন্তুষ্টির পেছনে বড় কারণ।
২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া অভিবাসীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সিরীয়দের এক-তৃতীয়াংশ জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও ইরাক ও ইরিত্রিয়ার অভিবাসীদের মধ্যে একই সংখ্যক অসন্তুষ্ট। গবেষকরা বলছেন, সিরীয়রা তুলনামূলকভাবে বেশি সুরক্ষা ও পারিবারিক পুনর্মিলনের সুবিধা পেয়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া ইউক্রেনীয়দের মধ্যে সন্তুষ্টির হার কিছুটা বেড়েছে, তবে অর্ধেকের বেশি এখনো জীবন নিয়ে অসন্তুষ্ট। গবেষণায় উঠে এসেছে, জার্মান ভাষার দক্ষতা জীবনমানের সন্তুষ্টির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। যারা বাসায় কম জার্মান ভাষা ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে অসন্তুষ্টির হার বেশি।
গবেষণা বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে জার্মানিতে বসবাস করলে ভাষাগত দক্ষতা ও শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ বাড়ে, ফলে জীবনমানের সন্তুষ্টিও বাড়ে।
অন্যদিকে, স্পেন, ইতালি, পর্তুগাল ও গ্রিসে অবস্থানরত জার্মান অভিবাসীরা নিজেদের জীবন নিয়ে অনেক বেশি সন্তুষ্ট। গবেষকদের মতে, এসব দেশের উষ্ণ আবহাওয়া ও তুলনামূলক কম জীবনযাত্রার খরচ এই সন্তুষ্টির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
logo-1-1740906910.png)