পর্তুগালের মন্তিজো শহরের একটি বাসস্টপে ঝুলানো একটি নির্বাচনী পোস্টার দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। কট্টর-ডানপন্থি রাজনৈতিক দল শেগার নেতা আন্দ্রে ভেনতুরার ছবিসংবলিত ওই বিলবোর্ডে লেখা হয়েছে, “Isto não é Bangladesh”। যার অর্থ “এটা বাংলাদেশ নয়”। দৈনিক ইত্তেফাক এ সংবাদটি প্রকাশ করেছে।
এই বার্তাকে বাংলাদেশি প্রবাসীরা অপমানজনক ও বর্ণবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এটি শুধু বাংলাদেশিদের নয়, বরং অভিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
ভেনতুরার আরেকটি পোস্টারে লেখা রয়েছে, “যাযাবর সম্প্রদায়কে অবশ্যই আইন মেনে চলতে হবে”। বিশ্লেষকদের মতে, এসব বার্তা অভিবাসনবিরোধী মনোভাব উসকে দিচ্ছে এবং আসন্ন ২০২৬ সালের জানুয়ারির রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে শেগা দলের প্রচারণার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভেনতুরা নিজেই ইনস্টাগ্রামে পোস্টারটির ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “ওরা ইতোমধ্যেই রাস্তায় নেমে পড়েছে। ১৮ জানুয়ারি আমরা এই দেশকে নাড়িয়ে দেব। কোনো ভয় নেই!” যা পরিস্থিতিকে আরো উত্তপ্ত করে তোলে।
মোইটা শহরের মেয়র কার্লোস আলবিনো স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “আইন সবার জন্য সমান। অভিবাসী হোক বা শেগা দলের নেতা, সবাইকে আইন মানতে হবে। জেনোফোবিয়া ও বর্ণবাদ অপরাধ”। তিনি জানান, নগর পরিষদ সরাসরি অভিযোগ না করলেও বিষয়টি প্রসিকিউটর অফিসের মাধ্যমে যাচাই হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে প্রবাসীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং জানিয়েছে যে তারা বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি সাংবাদিক ফারিদ পাটোয়ারি বলেন, “অনলাইনে এমন বার্তা দেখা গেলেও রাস্তায় পোস্টার হলে তার প্রভাব অনেক বেশি। পর্তুগাল সব সময় একটি নিরাপদ ও অতিথিপরায়ণ দেশ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এমন বার্তা প্রকাশিত হলে চুপ থাকা উচিত নয়”।
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে পর্তুগালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সুসা ছাড়াও আন্দ্রে ভেনতুরা, লুইস মার্কেস মেন্ডেস, ক্যাটারিনা মার্টিনসসহ আরো অনেকে।
logo-1-1740906910.png)