
আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় বর্তমানে ২০ হাজার ৩৯২ জন বাংলাদেশি অভিবাসী অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা রিলিফওয়েব। সংস্থাটির সর্বশেষ ‘ডিসপ্লেসমেন্ট ট্র্যাকিং মেট্রিক্স (DTM)’ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। মে থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত লিবিয়ার ১০০টি পৌরসভায় পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, দেশটিতে বিশ্বের ৪৫টি দেশের মোট ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯০ জন অভিবাসী রয়েছেন।
এই বিপুল সংখ্যক অভিবাসীর মধ্যে বাংলাদেশিরা গড়ে দুই শতাংশ। সংখ্যার দিক থেকে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সুদানের নাগরিকরা, তাদের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার, যা মোট অভিবাসীর ৩৫ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নিগার (১ লাখ ৮৯ হাজার) এবং তৃতীয় অবস্থানে মিসর (১ লাখ ৬৯ হাজার)।
বাংলাদেশিদের যাত্রাপথ ও খরচ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শতকরা ৪৬ ভাগ বাংলাদেশি তুরস্ক হয়ে লিবিয়ায় প্রবেশ করেন। এই পথে তাদের গড় খরচ প্রায় ৪ হাজার ২৭৭ মার্কিন ডলার। এছাড়া ১৪ শতাংশ বাংলাদেশি প্রথমে আরব আমিরাত, পরে তুরস্ক হয়ে লিবিয়ায় যান, যেখানে খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার ২২৮ ডলার। ১৩ শতাংশ বাংলাদেশি আরব আমিরাত হয়ে মিসর ঘুরে লিবিয়ায় প্রবেশ করেন, যার গড় খরচ ৩ হাজার ৪৯৫ ডলার।
অন্যদিকে, ২৭ শতাংশ বাংলাদেশি বিভিন্ন বিকল্প পথ ব্যবহার করে। যেমন মিসর, জর্ডান, কাতার, ভারত, সৌদি আরবসহ আরো কয়েকটি দেশ। এই পথে তাদের গড় খরচ তুলনামূলকভাবে কম, প্রায় ১ হাজার ৬৬২ ডলার।
এই তথ্যগুলো অভিবাসন ব্যবস্থার জটিলতা ও ঝুঁকির দিকগুলো তুলে ধরছে। উচ্চ খরচ, দীর্ঘ যাত্রাপথ এবং অনিশ্চয়তা; সব মিলিয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য লিবিয়ায় অভিবাসন একটি কঠিন বাস্তবতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভিবাসন প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার উচিত নিরাপদ, স্বচ্ছ ও নিয়মিত অভিবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।