
কফি শুধু এক কাপ পানীয় নয়, বরং এটি এক ধরনের অনুভূতি, এক টুকরো ইতিহাস। কেউ সকালে ঘুম ভাঙাতে খান, কেউ সন্ধ্যায় গল্প জমাতে। কিন্তু এই কফির শিকড় কোথায়? টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক মজার ফটোস্টোরিতে তুলে ধরা হয়েছে কফির ঐতিহাসিক যাত্রা- ইথিওপিয়া থেকে ইতালি পর্যন্ত।
প্রথমে চলুন ইথিওপিয়ায়। এখানেই কফির জন্ম। এক গল্প আছে, একদিন এক ছাগলপালক দেখলেন তার ছাগলগুলো এক ধরনের লাল ফল খেয়ে অদ্ভুতভাবে চঞ্চল হয়ে উঠেছে। সেই ফলই ছিল কফি বিন। এখান থেকেই শুরু হয় কফির যাত্রা। ইথিওপিয়ার কফি এখনো ‘ওয়াইল্ড’; প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়, স্বাদে থাকে ফলের টান, ফুলের ঘ্রাণ।
এরপর কফি পাড়ি দেয় ইয়েমেন, তুরস্ক, মিসর হয়ে ইউরোপে। তুরস্কে কফি ছিল রাজকীয় পানীয়, আর মিসরে এটি ছিল জ্ঞানচর্চার সঙ্গী। ইউরোপে কফি প্রথমে আসে ভেনিসে, তারপর ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইতালিতে। ইতালির মানুষ কফিকে শুধু পানীয় নয়, বরং শিল্পে পরিণত করেছে। এসপ্রেসো, ক্যাপুচিনো, ল্যাটে—সবই ইতালির অবদান।
ইতালির কফিশপগুলোতে কফি শুধু খাওয়া হয় না, বরং সেখানে বসে মানুষ রাজনীতি, সাহিত্য, প্রেম সব নিয়ে আলোচনা করে। এক কাপ কফি যেন এক টুকরো সমাজ। এখানেই কফি হয়ে ওঠে ‘ক্যারেক্টার’ একটি পণ্যের চেয়ে অনেক বেশি কিছু।
এই ফটোস্টোরিতে আরো বলা হয়েছে, কফির স্বাদ শুধু তার উৎপত্তিস্থলের মাটি, জলবায়ু বা প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে না, বরং এটি বহন করে সংস্কৃতি, ইতিহাস ও মানুষের গল্প। যেমন ইথিওপিয়ার কফিতে থাকে ফলের স্বাদ, তুরস্কের কফিতে থাকে গাঢ়তা, আর ইতালির কফিতে থাকে নিখুঁত ভারসাম্য।
আজকের দিনে কফি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও কফিশপের সংখ্যা বাড়ছে, তরুণরা কফিকে ঘিরে গড়ে তুলছে নতুন সংস্কৃতি। কিন্তু এই কফির প্রতিটি চুমুকে লুকিয়ে আছে শত শত বছরের ইতিহাস, ভ্রমণ আর মানুষের আবেগ।
তাই পরেরবার যখন আপনি কফির কাপ হাতে নেবেন, একটু ভাবুন এই কাপের ভেতরে শুধু কফি নয়, আছে ইথিওপিয়ার পাহাড়, তুরস্কের রাজপ্রাসাদ, ইতালির কফিশপ, আর আছে ছাগলপালকের সেই বিস্ময়।