অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় ইসিএইচআর সংস্কারে এগোল ইউরোপ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৭
ইউরোপে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশন (ECHR) আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগের লক্ষ্যে একটি নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সম্মত হয়েছে ৪৬টি দেশ। ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে অনুষ্ঠিত ইউরোপের বিচারমন্ত্রীদের বৈঠকে ব্রিটেন, ফ্রান্স, ডেনমার্কসহ অংশগ্রহণকারী দেশগুলো কনভেনশনের আধুনিকায়ন বিষয়ে আলোচনার পথ সুগম করে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ সম্মেলনে দেশগুলো একটি “রাজনৈতিক ঘোষণা (political declaration)” গ্রহণের দিকে কাজ করবে। যদিও এখন পর্যন্ত কনভেনশনটি পুনর্লিখনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়নি, তবে এর ব্যাখ্যা, বিচারিক প্রয়োগ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ।
কনজারভেটিভ দল ও রিফর্ম ইউকে দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটেনকে ইসিএইচআর থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের অভিযোগ, কনভেনশন অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে তোলে এবং ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে বাধা সৃষ্টি করে।
তবে নতুন লেবার সরকার সেই পথকে অগ্রাহ্য করেছে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকার বলছে, ইসিএইচআর থেকে বেরিয়ে যাওয়া নয়, বরং এর প্রয়োগপদ্ধতি সংস্কারই এখন জরুরি। বিশেষ করে ব্রিটিশ আদালতগুলো কনভেনশনকে যেভাবে ব্যাখ্যা করে, তাতে বাস্তব চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়- এমন মন্তব্যও দিয়েছে তারা।
স্টারমার ও ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাতে ফ্রেডেরিকসেন বৈঠকের আগে যৌথ প্রবন্ধে লেখেন, “ইউরোপজুড়ে বিদ্বেষ ও বিভেদের রাজনীতিকে রুখতে মানবাধিকার কাঠামোর বাস্তব প্রয়োগে কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন।”
বৈঠক শেষে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান আলাঁ বেরসেট সাংবাদিকদের বলেন, “এটি একটি প্রক্রিয়ার শুরু, এবং সমঝোতার ভিত্তিতেই এগোতে হবে।”
তিনি জানান, রাজনৈতিক ঘোষণাগুলো অতীতেও সংকট মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। তবে মে মাসে কী সিদ্ধান্ত হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
বেরসেট আরো বলেন, “এখন আমাদের কাজ শুরু করা প্রয়োজন; তারপর দেখা যাবে এই প্রক্রিয়া কোথায় পৌঁছায়।”
ইউরোপজুড়ে অবৈধ অভিবাসন, বিশেষ করে ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টাই আজ বড় রাজনৈতিক ইস্যু। সমালোচকদের মতে, দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কার্যকর না হলে মানবপাচারকারীরা আরো উৎসাহিত হয়। অন্যদিকে মানবাধিকারকর্মীদের মতে, ইসিএইচআর দুর্বল হলে মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে।
সব মিলিয়ে, ২০২৫ সালের মে মাসের শীর্ষ সম্মেলন ইউরোপে অভিবাসননীতি ও মানবাধিকার কাঠামোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
logo-1-1740906910.png)