পর্তুগালে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। দেশটির সরকার সম্প্রতি নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবাসিক থাকার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সাত থেকে দশ বছর করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই সংশোধনী বর্তমানে সাংবিধানিক আদালতের পর্যালোচনার অধীনে থাকায় আইনটি সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে।
ফোর্বসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, বর্তমান আইনে পর্তুগিজ নাগরিকত্বের জন্য অন্তত পাঁচ বছর দেশটিতে বসবাস করতে হয়। কিন্তু অক্টোবর ২০২৫-এ গৃহীত নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, নাগরিকত্বের জন্য আবাসিক থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে দশ বছর করা হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক এবং পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশগুলোর (ব্রাজিল, অ্যাঙ্গোলা, কাবো ভার্দে, গিনি-বিসাউ, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, মোজাম্বিক, সাও টোমে ও প্রিন্সিপে এবং তিমুর-লেস্তে) নাগরিকদের জন্য এই মেয়াদ সাত বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, নাগরিকত্বের সময় গণনা শুরু হবে আবাসিক অনুমতি পাওয়ার পর থেকে। আবেদন জমা দেওয়ার সময় থেকে নয়। বাস্তবে এর অর্থ হলো, আবাসিক অনুমতি পেতে সাধারণত দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। ফলে গোল্ডেন ভিসা বিনিয়োগকারী বা ডিজিটাল নোম্যাড ভিসাধারীদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়ার সময়সীমা কার্যত ৯ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।
এই পরিবর্তনগুলো নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। পর্তুগালের ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি সংশোধনীটি সাংবিধানিক আদালতে পাঠিয়েছে। তাদের দাবি, দুটি বিষয় সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করছে, বিভিন্ন জাতীয়তার জন্য ভিন্ন আবাসিক সময়সীমা নির্ধারণ এবং আবেদন জমা দেওয়ার সময় থেকে নয়, বরং আবাসিক অনুমতি ইস্যুর সময় থেকে সময় গণনা শুরু করা।
সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী সমিতিও এই মতকে সমর্থন করেছে। তাদের মতে, নতুন আইন আইনি নিশ্চয়তা, সমতা ও মানব মর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ফলে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রয়েছে। সাংবিধানিক আদালত বিষয়টি পর্যালোচনা করছে এবং এর পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। এ অবস্থায় গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রামের আওতায় পর্তুগালে বসবাসরত বিদেশিদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
logo-1-1740906910.png)